বাবুল হক, মালদহ: সালিশি সভার নিদানে আদিবাসী যুবককে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করল গ্রামের মোড়ল-মাতব্বররা। এমনই কাণ্ড ঘটল মালদহের আদিবাসী অধ্যুষিত ব্লক হবিবপুরে। এই ঘটনায় পুলিশের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের না হলেও ঘটনার খবর পেয়ে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। আক্রান্ত যুবকরে নাম মণ্ডল হাঁসদা (৩২)। মারাত্মকভাবে অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন ওই আদিবাসী যুবক। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছ। গোটা গটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
জানা গিয়েছে, অগ্নিদগ্ধ যুবকের বাড়ি হবিবপুর থানার কেন্দপুকুর এলাকার চ্যাটরা গ্রামে। পিসির সঙ্গে জমির দখলকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ চলছিল মণ্ডলের। সেই বিবাদ চরমে উঠলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে পিসিকে খুনের হুমকি দেন মণ্ডল। পিসির নালিশে বুধবার রাতে গ্রামে বসে সালিশি সভা বসে। অভিযোগ, সেই সভায় ওই যুবককে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার নিদান দেয় মোড়ল-মাতব্বররা। মণ্ডল হাঁসদা বেঁচে থাকলেই নাকি তিনি তাঁর পিসিকে খুন করে ফেলবেন। এই যুক্তিতেই মণ্ডলকে পুড়িয়ে হত্যার নিদান দেওয়া হয়। সালিশি সভার সেই নিদান পেয়েই ওই যুবককে বৃহস্পতিবার একটি ল্যাম্পপোস্টে বেঁধে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। যদিও স্থানীয় কিছু মানুষের তৎপরতায় তাঁকে উদ্ধার করে তড়িঘড়ি হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে।
এই ঘটনায় সুয়োমোটো মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে মালদহের হবিবপুর থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, মণ্ডল হাঁসদার বাবা-মায়ের অনেকদিন আগেই মৃত্যু হয়েছে। বছর চারেক আগে স্ত্রীও মণ্ডলকে ছেড়ে চলে যান। নাবালিকা মেয়ে পূজাকে নিয়েই মণ্ডলের সংসার। তিনি পেশায় শ্রমিক। কখনওসখনও ভিন রাজ্যেও কাজ করতে যান। আটদিন আগেই ভিনরাজ্য থেকে বাড়ি ফিরেছেন। এদিকে পৈতৃক কিছু জমির দখল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মণ্ডলের সঙ্গে তাঁর পিসি শ্রীমতী হাঁসদার বিবাদ চলছিল। পিসি জমি ছাড়তে নারাজ। রাগের মাথায় খুনের হুমকি দিয়েছিলেন ওই যুবক। তাতেই এই মর্মান্তিক পরিণতি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.