ছবি: সুজিত মণ্ডল
বিপ্লব দত্ত, কৃষ্ণনগর: চারদিকে বাঁশঝাড়, অন্যান্য গাছে ঘেরা ঘন জঙ্গল৷ দিনের আলোতেও ওই এলাকায় ঢুকলেই কেমন একটা গা ছমছম ভাব৷ তাই সচরাচর কেউ ওই জঙ্গলে পা রাখেন না৷ বারবার এলাকার শিশুদেরও ওই জঙ্গলে ঢুকতে বারণ করেছেন তাঁরা৷ কিন্তু, কে শোনে কার কথা? না জানিয়ে জঙ্গলে ঢুকতেই ঘটল অবাক কাণ্ড৷ সামনে এল গাঁয়ে কাঁটা দেওয়া ঘটনা৷
নদিয়ার চকদিক নগরের গোপালপুরে জঙ্গলে ঢুকেই একটা গর্ত দেখতে পায় শিশুরা৷ কৌতূহলবশত ওই গর্তে মুখ বাড়াতেই ভয় পেয়ে যায় তারা৷ দেখে, গর্তের মধ্যেই পড়ে রয়েছে মানুষের হাড়গোড়৷ সঙ্গে কঙ্কালের মাথা৷ ব্যাস, ওই দেখেই ভয়ে দৌড়ে জঙ্গল ছাড়ে শিশুরা৷ ছুটতে ছুটতে ওই শিশুরা বাড়ি গিয়ে পৌঁছে গোটা ঘটনাটি জানায়৷ কঙ্কালের উদ্ধারের খবরই এখন ‘টক অফ দ্য টাউন’৷
স্থানীয় বাসিন্দা বিশ্বনাথ সিংহ ১৮ আগস্ট বাড়ি থেকে বেড়িয়ে নিখোঁজ হয়ে যান৷ পরিজনরা ভেবেছিলেন, হয় তো কাজের খোঁজে ভিন রাজ্যে চলে গিয়েছেন তিনি৷ কয়েকদিনের মধ্যেই বাড়ি ফিরে আসবেন৷ কিন্তু, প্রায় বাইশ দিন কেটে গেলেও কোনও খোঁজ না মেলায় উদ্বিগ্ন বাড়ির লোকজনেরা৷ ইতিমধ্যেই কঙ্কালের উদ্ধারের ঘটনা আশঙ্কা বাড়াচ্ছে নিখোঁজ বিশ্বনাথের পরিজনদের৷ তাঁর ছেলের বক্তব্য, ‘‘ওই কঙ্কালটি হয়তো তাঁর বাবারই৷ কঙ্কালের আশেপাশের জামাকাপড়ের চিহ্ন দেখেও তাই মনে হচ্ছে৷’’ যদিও প্রতিবেশী কয়েকজন জানিয়েছেন, নিখোঁজ হওয়ার আগে কোন একদিন রাতে বিশ্বনাথ সিংহকে বেহেড মদ্যপ অবস্থায় রাতের আলো-আঁধারিতে দেওয়ালে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যেতে দেখেছিলেন কয়েকজনl প্রশ্ন এখন একটাই, বিশ্বনাথের দেহ জঙ্গলের গর্তে মিলবেই বা কেন?
পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার বলেন, ‘‘গোপালপুর গ্রামের জঙ্গল থেকে উদ্ধার হওয়া হাড়গোড়গুলি মানুষের বলেই প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে৷ যদিও পুলিশকর্তাদের দাবি, ওই কঙ্কালটির শনাক্তকরণ এখনও সম্ভব হয়নি৷ উদ্ধার হওয়া হাড়গোড়গুলি ফরেনসিক টেস্টে পাঠানো হয়েছে৷’’
দিনমজুর বিশ্বনাথ সিংহ আর্থিক অনটনে দিন কাটাচ্ছিলেন৷ সব সময় ঠিকমতো কাজ পাচ্ছিলেন না৷ নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতেন৷ জঙ্গলে গিয়ে বিশ্বনাথ আদৌ আত্মহত্যা করেছিলেন কী না, সেই সন্দেহও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা৷ এসব প্রশ্নেরই এখন উত্তর খুঁজছেন আধিকারিকরা৷
ছবি : সঞ্জিত ঘোষ
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.