টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: সামাজিক দূরত্বকে হেলায় উড়িয়ে ‘প্রচেষ্টা প্রকল্প’-এর টাকা পেতে অসংগঠিত শ্রমিকদের ভিড় বাঁকুড়ার বড়জোড়া ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন দপ্তরে। গত কয়েকদিন ধরে টালবাহানার পর আজ, সোমবার থেকে বাঁকুড়া জেলায় প্রচেষ্টা প্রকল্পের ফর্ম জমা নেওয়া শুরু হয়েছে ব্লকে ব্লকে। এদিন সকাল হতেই বড়জোড়া ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন দপ্তরে কয়েক হাজার অসংগঠিত শ্রমিক ভিড় জমান। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে যখন দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী – মানুষে মানুষে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজকর্ম করার নিদান দিচ্ছেন, তখন বাঁকুড়ার শিল্পাঞ্চল বড়জোড়ার এই দৃশ্য দেখে কপালে চিন্তার ভাঁজ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
লকডাউনের জেরে কাজ হারানো অসংগঠিত শ্রমিকদের হাতে নগদ জোগানের জন্য এককালীন এক হাজার টাকা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে রাজ্য সরকার। শুরু হয়েছে ‘প্রচেষ্টা প্রকল্প’। আর সেই সুবিধা গ্রহণ করার জন্য জেলার অসংগঠিত শ্রমিকরা ভিড় জমাচ্ছেন ব্লকে ব্লকে। সোমবার থেকেই এই প্রকল্পে আবেদনপত্র জমা নেওয়ার কাজ শুরু হয়। বাঁকুড়ার বড়জোড়ায় তাই বিডিও অফিসের সামনে সকাল থেকে ভিড় জমান শ্রমিকরা। ভিড়ের খবর পেয়ে দুপুর ১২টা নাগাদ তা নিয়ন্ত্রণে নামানো হয় পুলিশ বাহিনী। ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিড় হঠিয়ে দেয় পুলিশ।
স্বাস্থ্যবিধিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রাজ্য সরকারের ঘোষিত প্রকল্পের সুবিধা পেতে অসহায়, অসংগঠিত শ্রমিকদের এহেন জমায়েত বিপদ সংকেত। তা বুঝতে পারছেন দলমত নির্বিশেষে সকলে।স্থানীয় সিপিএম নেতা সুজয় চৌধুরি বলছেন, “গত কয়েকদিন ধরে টালবাহানার পর এদিন সকাল থেকে বড়জোড়া ব্লক অফিসে অসংগঠিত শ্রমিকদের জমায়েত হয়েছে প্রশাসনিক পরিকল্পনার অভাবে। এই প্রচেষ্টা প্রকল্পের ফর্ম দেওয়া নেওয়া শুরু করা হোক গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি থেকে। তাহলেই এই সমস্যা মিটবে।”
করোনা সংক্রমনের আবহে বড়জোড়া ব্লক অফিসে অসংগঠিত শ্রমিকদের এত ভিড় নিয়ে জানতে চাওয়া হলে, প্রশাসনিক কর্তাদের বক্তব্যে মিল পাওয়া যায়নি। বড়জোড়া ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক ভাস্কর রায় জানিয়েছেন, প্রথমে প্রশাসন এই অনুমতি দিয়েছিল। তবে পরে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাঁকুড়া সদর মহকুমা শাসক সুদীপ্ত দাস আবার বলছেন, ‘প্রচেষ্টা প্রকল্প’-এ ফর্ম বিলির অনুমতিই দেওয়া হয়নি। জেলাশাসক অরুণ প্রসাদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে, তাঁকে পাওয়া যায়নি।
যদিও এই দৃশ্য নতুন কিছু নয়। লকডাউন ঘোষণার সময় থেকেই এই জেলার সবজি বাজার, মুদির দোকান, মাছ ও মাংসের দোকানে ভিড় করে কেনাকাটা করেছেন বহু মানুষ। জনধন প্রকল্পের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলার লাইনও দেখা গিয়েছে। এবার অসংগঠিত শ্রমিকদের জমায়েত ঘিরে চিন্তা বাড়ল প্রশাসনের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.