সুব্রত বিশ্বাস: লোকাল ট্রেনে যাত্রা করার একঘেয়ে পরিকাঠামো এবার বদলে ফেলছে রেল। টিভি দেখতে দেখতে যাত্রা করতে পারবেন যাত্রীরা। সিটে বসে বা দাঁড়িয়ে এক ঘণ্টা হোক বা পাঁচ মিনিট, যাই যাত্রা পথ হোক না কেন টিভি দেখার সুযোগ পাবেন প্রত্যেক যাত্রী।
সোমবার থেকে হাওড়া ডিভিশনের লোকাল ট্রেনে চালু হচ্ছে এই ‘ট্রেন ইনফোটেনমেন্ট’। প্রতিটি কোচের একেবারে শেষ দুই প্রান্তে দু’টি করে মোট চারটি টিভি বসছে। প্রতিটি টিভি এলইডি ও ২৭ ইঞ্চির মাপে। টিভির স্ক্রিনের মোট মাপের ৭০ শতাংশে যাত্রীরা দেখতে পারবেন নানা ধরনের বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান। খেলা থেকে সিনেমার নানা দৃশ্য, নাচ, গান, ভ্রমণ ইত্যাদি। সঙ্গে সেখানেই পরিবেশন করা হবে বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন। বাদবাকি স্ক্রিনের যে ত্রিশ শতাংশ অবশিষ্ট থাকবে, সেখানে রেলের নানা ধরনের সতর্কীকরণ বার্তা থেকে পরিষেবার নানা বিষয় পরিবেশিত হবে। যেমন টিকিট কেটে যাত্রা, লাইন পারাপার না করা, ছাদে না চড়া, কামরায় ধূমপান, মদ্যপান না করা, বেআইনি সামগ্রী বহন না করা ইত্যাদির সচিত্র প্রতিবেদন।
হাওড়ার ডিআরএম (Howrah DRM) মণীশ জৈন বলেন, ভারতীয় রেলে এই প্রকল্প মুম্বইয়ের পর দ্বিতীয় স্তরে চালু হচ্ছে হাওড়া ডিভিশনে। সোমবার হাওড়া থেকে ১১:৫০ মিনিটের ব্যান্ডেল লোকালটিতে চালু হচ্ছে এই পরিষেবা। এরপর ক্রমান্বয়ে আরও পঞ্চাশটি ট্রেনে একই পরিষেবা চালু হবে। প্রতি কোচে চারটি করে এলইডি টিভি (LED TV) লাগানো হবে। পুরো ট্রেনটিতে এমন ৪৮টি টিভি থাকবে। এই প্রকল্পটি পুরোপুরি নান্দনিকতার পাশাপাশি রেলের ভাঁড়ারে লক্ষ্মী আনবে।
হাওড়ার সিনিয়র ডিভিশন্যাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার সুজিত সিনহা জানান, হাওড়া ডিভিশনের পঞ্চাশটি লোকালে এই পরিষেবা চালু হচ্ছে। একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং ও কম্পিউটার সংস্থা পরিচালনার দায়িত্বে থাকছে। এ জন্য তারা বাৎসরিক পঞ্চাশ লক্ষ টাকা দেবে রেলকে। তিন বছর পর ১০ শতাংশ হারে বাড়তি ভাড়া দেবে। এই পরিষেবা চালুর কথা শুনে যাত্রীরা উৎসাহিত। তাঁদের অনেকেই প্রথম দিনের টিভি সম্বলিত কোচে যাত্রা করার জন্য নির্ধারিত ট্রেনটিকে বেছে নিয়েছেন। সাঁতরাগাছি থেকে হিন্দমোটর কাজে যান সুমন দাস। তিনি বলেন, রোজই দশটা নাগাদ হাওড়া থেকে ট্রেন চড়ি। সোমবার ১১.৫০ মিনটের ব্যান্ডেল লোকালটি ধরব। টিভি দেখতে দেখতে যাত্রা করব।
রেলের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ জানিয়েছে, লোকাল ট্রেনে ভিড় হয়, তাই একেবারে কোচের শেষ প্রান্তের দেওয়ালে এই টিভি থাকবে। যাতে যাত্রীদের বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে না হয়। তবে এই প্রকল্পের জন্য যথেষ্ট চিন্তিত আরপিএফ বিভাগ। টিভি চুরির আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। টিভিগুলি গার্ড বা চালকের ক্যাব থেকে কোনওরকমভাবে পরিচালনা হবে না। সার্ভারের মাধ্যমে তা চলবে বলে জানা গিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.