রাজকুমার, আলিপুরদুয়ার: ডুয়ার্সে ফের চিতাবাঘের দেহ উদ্ধার। বৃহস্পতিবার সকালে গ্যারগেন্ডা চা-বাগানে এক চিতাবাঘের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। বুধবারও এই চা-বাগানেই একটি পূর্ণবয়স্ক মহিলা চিতাবাঘের দেহ উদ্ধার হয়। জানা যায়, মাংসে বিষ মিশিয়ে খাওয়ানো হয়েছিল বন্যপ্রাণীটিকে। একই কায়দায় এদিন মাংসে বিষ মিশিয়ে খুনের ঘটনায় উদ্বিগ্ন বনদপ্তর। বারবার জঙ্গল সংলগ্ন চা-বাগান, বসতিতে চিতাবাঘের হানায় বিরক্ত বাসিন্দারা। বনদপ্তরের উপর আস্থা হারিয়ে এইভাবে চিতাবাঘের উপদ্রব থেকে বাঁচার রাস্তা বের করেছেন বাসিন্দারা। কিন্তু এই প্রবণতা বিপজ্জনক বলছেন পশুপ্রেমীরা। কপালে চিন্তার ভাঁজ বনদপ্তরের।
[মাংসে বিষ মিশিয়ে মেরে ফেলা হল চিতাবাঘকে, ডুয়ার্সে চাঞ্চল্য]
দিন কয়েক আগে আলিপুরদুয়ারের বীরপাড়া-মাদারিহাট ব্লকের ধুমচিপাড়া চা-বাগানে হামলার মুখে পড়ে বছর পাঁচেকের এক শিশু। বাগানে যখন খেলছিল সে, তখন গলায় কামড় বসিয়ে তাকে জঙ্গলে নিয়ে চলে যায় একটি চিতাবাঘ। চা-বাগানের কর্মীদের তাড়ায় শেষপর্যন্ত শিকারকে ফেলে পালিয়ে যায় জন্তুটি। কিন্তু, তখন শিশুটির দেহে আর প্রাণ ছিল না। গত রবিবার একই ঘটনা ঘটে ধূমচিপাড়া চা-বাগানের কাছেই রামঝোলা চা-বাগানে। চিতাবাঘের হামলার প্রাণ যায় বছর বারোর এক বালকের। চিতাবাঘ ধরতে ধূমচিপাড়া চা-বাগানে খাঁচা পাতে বনদপ্তর। খাঁচায় দু’টি চিতাবাঘ ধরাও পড়ে। বনকর্মীদের আশঙ্কা, আলিপুরদুয়ারের বীরপাড়া-মাদারিহাট ব্লকের চা-বাগান লাগোয়া এলাকায় বেশ কয়েকটি চিতাবাঘ ঢুকে পড়েছে।
[গরুমারা অভয়ারণ্যে ঢুকে গণ্ডার মেরে খড়গ নিয়ে পালাল চোরাশিকারিরা]
কিন্তু এতেই ক্ষোভ সাধারণ মানুষের। খাঁচায় চিতাবাঘ ধরা পড়ছে ঠিকই। নিয়মমাফিক সেই বন্যজন্তুকে ফের জঙ্গলে ছেড়ে দিয়ে আসছেন বনকর্মীরা। কিন্তু তাতে লাভের লাভ কিছুই হচ্ছে না বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। ফের জঙ্গল লাগায়ো বসতিতে ঢুকে পড়ছে চিতাবাঘ। বন্যপ্রাণীর হানায় প্রাণ ওষ্ঠাগত বসতির বাসিন্দাদের। তাই নিস্তার পেতে ছাগলের মাংসের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে চিতাবাঘ মারার ছক কষেছেন তাঁরা। কিন্তু এই বিপজ্জনক প্রবণতা নিয়ে উদ্বিগ্ন পশুপ্রেমীরা। বনদপ্তরকে আমল না দিয়ে এই কাজ চলতে থাকলে বন্যপ্রাণ বিপন্ন হয়ে পড়বে। পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হবে বলে মত পশুপ্রেমীদের। বনদপ্তরের দৃঢ় বিশ্বাস, চিতাবাঘের হানা বাড়লে বসতির বাসিন্দাদের এই খুনে কার্যকলাপ চলতে থাকবে। যা কোনওভাবে বন্ধ করতে না পারলে ডুয়ার্সে বিপন্ন হবে বন্যপ্রাণ। আর নষ্ট হবে পরিবেশের ভারসাম্য। যা আরও বড় ক্ষতির দিকে ঠেলে দেবে মানবসভ্যতাকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.