নন্দন দত্ত, সিউড়ি: কয়লা উত্তোলনের জন্য জমি কিনবে ডিভিসি। স্থান বেছে নেওয়া হয়েছে বীরভূমের দুবরাজপুরের লোবায়। কিন্তু ডিভিসি কর্তৃপক্ষ জমির দর ঘোষণা করতেই রে রে করে উঠলেন চাষিরা। শুক্রবার প্রথম বৈঠকেই গুটিকয়েক চাষির উপস্থিতি বুঝিয়ে দিল, জমির দাম নিয়ে লোবার সংখ্যাগরিষ্ঠের মত কী হতে পারে। তারই ভিত্তিতে ফের পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ। এমনই জানালেন ডিভিসির আধিকারিক সুধীর মুখোপাধ্যায়। একইসঙ্গে দুবরাজপুরের বিডিও অনিরুদ্ধ রায় জানান, এদিন ব্লক পর্যায়ে প্রথম বৈঠক ছিল। আগামিদিনে গ্রামের পকেটে পকেটে গিয়ে জমির দর নিয়ে আলোচনা হবে।
জমি জট কেটেছে। এবার কয়লা উত্তোলনে বরাত পাওয়া ডিভিসির জমি কেনার পালা। শুক্রবার গ্রাম থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে ব্লকের পাশেই ডিএসএ’র মাঠে প্রশাসনের তরফে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকা হয়। এখানে ভূমিহীন প্রায় পাঁচ হাজার পরিবারের মধ্যে মাত্র শ দেড়েক কৃষক উপস্থিত ছিলেন। কারণ, তাঁদের তরফে প্রথম বৈঠকটি বয়কটের ডাক দেওয়া হয়েছিল। শেষে স্থানীয় দুবরাজপুর, পণ্ডিতপুর এলাকা থেকে কয়েকজন চাষিকে ডেকে সভা ভরানোর চেষ্টা করেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁদের সামনেই ডিভিসির পক্ষ থেকে চারটি বিষয়ে ঘোষণা করা হয়।
প্রথম ঘোষণায় ছিল পুনর্বাসন প্যাকেজ। তাতে এলাকা ছাড়ার পর কোথায় পুনর্বাসন হবে, পানীয় জলের ব্যবস্থা, স্কুলের ব্যবস্থা হবে। এ নিয়ে কারও আপত্তি নেই। দ্বিতীয় দফায় জমির দাম একর প্রতি ১৪ লক্ষ টাকা ঘোষণা করতেই রে রে করে ওঠেন উপস্থিত কয়েকজন। তাঁদের স্পষ্ট দাবি, তাঁরা ওই দামে জমি বেচতে পারবেন না। আর তাঁদের চিরকালীন সম্পত্তি একবারেই কিনে নেবেন। এক চাষি ক্ষুব্ধ হয়ে জানতে চান, বৈঠকে তাঁদের কেন ডাকা হয়েছে। জানতে চান, তৃতীয় দফায় যাঁরা এর আগে ৭০০ একর জমি কম দামে ডিভিসিকে বিক্রি করে দিয়েছে তাঁদের কী হবে?
উল্লেখ্য, প্রথম পর্যায়ে ৭০০ একর জমি ডিভিসি নিজেদের উদ্যোগে কেনে। কিন্তু সেসব সরকারি বিধি বহির্ভূত হওয়ায় সরকার সেগুলিকে ‘খাস’ বলে ঘোষণা করে। এদিনের বৈঠকে সেই জমিদাতাদের নিয়ে ডিভিসির পরিকল্পনা জানতে চান উপস্থিত চাষিরা। চতুর্থ দাবিতে চাষিরা প্রশ্ন তোলেন, জমির ওপর নির্ভরশীল পরবর্তী প্রজন্মের কী হবে।
ডিভিসির কর্তারা জানান, যতক্ষণ চাষিরা সহমত না হচ্ছেন, ততদিন জমি কিনবেন না। চাষিরা জানান যে লোবার পাশেই অজয় নদ পেরিয়ে ইসিএল যে প্যাকেজে জমি কিনছে, অন্তত সেটুকু দিতে হবে।তবে বিডিও অনিরুদ্ধ রায় বলেন, ‘এটা ব্লক পর্যায়ে বৈঠক। তবে গ্রামে গ্রামে সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাষিদের নিয়ে বৈঠক হবে। আমরা প্রশাসনর তরফে চাষিদের অসুবিধার দিকে নজর দেব।’
ছবি: শান্তনু দাস।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.