(বাঁদিকে) সৌমিত্র খাঁ এবং (ডানদিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাঁচ বছর আগে তাঁরা ছিলেন স্বামী-স্ত্রী। স্বামী সৌমিত্রর হয়ে ভোটপ্রচারে যাবতীয় দায়িত্ব সামলেছিলেন সুজাতা মণ্ডল। তবে এবার বদলে গিয়েছে সমীকরণ। এখন সুজাতা ও সৌমিত্র একে অপরের প্রাক্তন। এবারও ভোটযুদ্ধে শামিল দুজনেই। তবে দল আলাদা। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রে ভোটের লড়াইয়ে মুখোমুখি সেই প্রাক্তন দম্পতি। সোমবার বাঁকুড়ায় নির্বাচনী জনসভার মঞ্চ থেকে নাম না করে সেই সৌমিত্রকেই বিঁধলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। বিষ্ণুপুরের বিদায়ী সাংসদের গোপন ছবি ফাঁসের হুঁশিয়ারি দিলেন তিনি।
গত লোকসভা নির্বাচনে(Lok Sabha 2024) বাঁকুড়ায় দুটি লোকসভা কেন্দ্রেই ফুটেছে পদ্ম। এবার সেই আসন পুনরুদ্ধারে কার্যত মরিয়া তৃণমূল। সোমবার সেখানেই নির্বাচনী প্রচার সারলেন মমতা। মঞ্চে দাঁড়িয়ে উন্নয়নমূলক একাধিক প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন। তেমনই আবার নাম না করে দুই বিদায়ী সাংসদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন মমতা। বলেন, “বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর দুটি সিটই পেয়েছিল বিজেপি। কিছু করেছে? বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুরের সাংসদ কিছু করেছেন? কতবার রায়পুরে এসেছেন?”
এর পর নাম না করে সৌমিত্রকে হুঁশিয়ারি দেন মমতা। বিবাহবিচ্ছেদের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “জানিনা ডিভোর্স হয়েছে কিনা। তাঁর স্ত্রী দাঁড়িয়েছেন সেখানে। তাঁর ফটোগুলি খুলি? তাহলে বিষ্ণুপুরের মানুষ বুঝতে পারবেন বিজেপি নেতারা কত আদর্শবান। সব ছবি আছে আমার কাছে।” বলে রাখা ভালো, আলাপ, মন দেওয়া নেওয়া, ঘনিষ্ঠতার পর একসঙ্গে ঘর বাঁধার সিদ্ধান্ত নেন সুজাতা ও সৌমিত্র। ২০১৬ সালের জুলাই মাসে বড়জোড়ার বাসিন্দা সুজাতার সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন সৌমিত্র। ২০১৯ সালে সস্ত্রীক সৌমিত্র যোগ দেন বিজেপিতে। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিট পান সৌমিত্র। তবে সেই সময় আদালতের নির্দেশে নিজের এলাকাতেই প্রবেশাধিকার হারান। নির্বাচনী বৈতরণী পার করতে স্ত্রীর উপরেই সম্পূর্ণ আস্থাশীল ছিলেন বিজেপি প্রার্থী। প্রায় একা প্রচার করে জিতিয়েছিলেন স্বামী সৌমিত্রকে। নিজের জয়ের কৃতিত্ব স্ত্রীকেই দিয়েছিলেন।
২০২১ সালে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন সুজাতা। সৌগত রায় এবং কুণাল ঘোষের হাত থেকে নেন ঘাসফুল শিবিরের পতাকা। তার পরই বদলে যায় স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের সমীকরণও। সাংবাদিক বৈঠক করে স্ত্রীর সঙ্গে জীবনের পথ আলাদা হয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেন সৌমিত্র। বিবাহ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্তের কথা জানাতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। শুরু হয় আইনি টানাপোড়েন। তার মাঝে অবশ্য বিধানসভা নির্বাচনে টিকিট পান সুজাতা। হেরে যান। বর্তমানে আইনি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ শেষ। আজ স্বামী-স্ত্রীর আগে জুড়েছে ‘প্রাক্তন’ তকমা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.