নন্দন দত্ত, সিউড়ি: সোশাল মিডিয়া (Social Media) অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে হেনস্থা হচ্ছে। ভোট প্রচারের মাঝে এমনই অভিযোগ তুলে পুলিশের দ্বারস্থ হলেন বীরভূমের বিদায়ী সাংসদ ও তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায় (Satabdi Roy)। রবিবার রাতে শতাব্দীর X হ্যান্ডল থেকে পর পর দুটি পোস্টে তাঁর প্রতিপক্ষ, বিজেপি প্রার্থী দেবাশিস ধরকে সম্পত্তি নিয়ে কটাক্ষ করে পোস্ট করা হয়। তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই শতাব্দী জানান, ওই পোস্ট তাঁর নয়। কে বা কারা এটা লিখল, তা জানতে চেয়ে তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। পাশাপাশি বিষয়টি দলের শীর্ষ নেতৃত্বকেও জানিয়েছেন বীরভূমের তারকা তৃণমূল প্রার্থী।
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে কোচবিহার জেলায় দায়িত্বে পাঠিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। কোচবিহার জেলায় শীতলকুচি কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চার গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়েছিল। তারপরেই তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল রাজ্য সরকারের তরফে। শীতলকুচি কাণ্ডের পর থেকেই রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা (1/2)
— Satabdi Roy (@SatabdiRoy_) March 31, 2024
বিভাগ সিআইডির আতশ কাচের তলায় ছিল এই অফিসার। এই অফিসারের সম্পত্তিগত বিষয়ে তদন্ত শুরু করে CID দেবাশিস ধরের সম্পত্তির বিভিন্ন নথি সংগ্রহের কাজ শুরু করেন সিআইডি গোয়েন্দারা। সেখান থেকেই জানা যায়, ২০১৫-১৭ সালের মধ্যে কয়েকশো গুণ সম্পত্তি বৃদ্ধি পেয়েছে ওই অফিসারের। (2/2)
— Satabdi Roy (@SatabdiRoy_) March 31, 2024
রবিবার রাতে শতাব্দীর সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে বীরভূমের (Birbhum) বিজেপির প্রার্থী দেবাশিস ধর সম্পর্কে মন্তব্য লেখা হয়। যা ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়। X হ্যান্ডেলে পোস্টের প্রথমটিতে লেখা, ‘২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে কোচবিহার জেলায় দায়িত্বে পাঠিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চার গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়েছিল। তার পরেই তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল রাজ্য সরকারের তরফে…।’ দ্বিতীয়টিতে লেখা হয়, ‘গোয়েন্দা বিভাগের আতশকাচের তলায় ছিল এই অফিসার। এই অফিসারের সম্পত্তিগত বিষয়ে তদন্ত শুরু করে সিআইডি। ২০১৫-১৭ সালের মধ্যে কয়েকশো গুণ সম্পত্তি বৃদ্ধি পেয়েছে ওই অফিসারের।’
বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা হতেই বিজেপি প্রার্থী (BJP Candidate) দেবাশিস ধর জানান, ‘‘ওঁকে আমি শ্রদ্ধা করি। ব্যক্তিগত সম্পর্ক আমাদের খুব মধুর। আমরা দুটি দলে দাঁড়িয়েছি। দুটি আদর্শে লড়ছি। কেউ একজন জয়ী হবে। এর মধ্যে কোথাও অন্য কোনও বিরোধ থাকার কথা নয়।’’ পাশাপাশি তিনি এও জানান, ‘‘শীতলকুচির (Sitalkuchi) ঘটনার জন্য আমাকে সাসপেন্ড করা হয়নি। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল ভোট পরবর্তী হিংসায় আমি নাকি কাজ করিনি। অথচ আমি দুদিনে ১৩২ জনকে গ্রেপ্তার করেছিলাম। জেলার নির্বাচনে জেলাশাসক সর্বশক্তিমান। তাঁর নির্দেশ মেনেই আমি কাজ করেছিলাম। তবুও আমার উপর কেন দোষ চাপিয়ে দেওয়া হল, এখনও তা বুঝিনি।’’
বিতর্কের কথা কানে যেতেই শতাব্দী রায় জানান, ‘‘আমি এই পোস্ট করিনি। আমি টুইট করি না। আমি পুলিশকে জানিয়েছি। কে এই লেখা লিখল তা তাদের দেখতে বলেছি। এসব আমার রুচিতে বাঁধে, এরকম পারিবারিক শিক্ষা পাইনি।’’ গত ১৫ বছরের তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায় বিরোধী দলের কোনও নেতার বিরুদ্ধে একটিও কটু মন্তব্য করেননি। কিন্তু নিজের অ্যাকাউন্টে বিজেপির প্রার্থী সম্পর্কে এমন লেখা দেখে তিনি নিজেই হতবাক।
উল্লেখ্য, চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে (Lok Sabha Election 2024) ডিপ ফেক ও এআই (AI) নির্ভর সোশাল মিডিয়ার প্রচারের মোকাবিলা করা জেলা প্রশাসনের কাছে চ্যালেঞ্জ বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিক। সোমবার বীরভূমের জেলাশাসক শশাঙ্ক শেট্টি বলেন, ‘‘জেলায় আমাদের এই ইন্টেলিজেন্সি দেখার জন্য একটি কমিটি আছে। রাজ্যস্তরেও আছে। যদি কোথাও কিছু হয়ে থাকে আমরা তা তদন্ত করে দেখব।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.