সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: বামের ভোট যে রামে গিয়েছিল, এতদিন এই নিয়ে চর্চা তা মেনে নিলেন বাম প্রার্থী। তৃণমূলের উপর বীতশ্রদ্ধ হয়েই নাকি বিজেপির উপর ভরসা রেখেছিল বাম সমর্থকরা, এমনই বিস্ফোরক দাবি করলেন বর্ধমান-দুর্গাপুরের বাম প্রার্থী সুকৃতি ঘোষাল। এবারও যে সেই ‘ট্রেন্ড’ বজায় থাকবে না তানিয়েও নিশ্চিত কোনও বার্তা দিতে পারলেন না তিনি।
২০১৯ লোকসভা কিংবা ২০২১ বিধানসভা, বাম ‘কোটা’র ভোট সুনামির মতো গিয়েছিল পদ্মে। ২০১৪ লোকসভা ভোটে বামেদের ভোট শতাংশ ছিল ২৯.৬১। সেখানে সিপিএমের একাই ছিল ২২.৭১ শতাংশ। ২০১৯ লোকসভা থেকেই কাস্তে হাতুড়ি ছেড়ে পদ্ম ফুলে যাওয়ার হিড়িক পরে বাম কর্মী, সমর্থক এমনকী নেতৃত্বের মধ্যেও। একধাক্কায় কমে যায় প্রাপ্ত ভোটের শতাংশ। ২০১৯ নির্বাচনে বামেদের ভোট শতাংশ ছিল ৭.৪৬। সেখানে সিপিএমের ৬.২৮ শতাংশ। রক্তক্ষরণ আরও বাড়ে ২০২১ বিধানসভার নির্বাচনে। বামেদের প্রাপ্ত ভোট ৪.৯২ শতাংশ। সিপিএমের ৪.৭২ শতাংশ। ২০১৯ থেকে বামেদের পদ্ম নির্ভরতার কারণে প্রাপ্ত ভোট থেকে নামতে নামতে একেবারে তলানিতে।
কিন্তু কেন? বর্ধমান-দুর্গাপুরের কংগ্রেস সমর্থিত বাম প্রার্থী সুকৃতি ঘোষাল স্বীকার করেছেন বামের ভোট বিপুল পরিমাণে রামে যাওয়ার প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, “তৃণমূলের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে বিজেপিকে ভোট দিয়েছিল। সিপিএমকে বিশ্বাস করেনি। তৃণমূলের বিকল্প ভেবেছিল বিজেপিকে। তাই ভোট দিয়েছিল।” এটা না হয় আম বাম সমর্থকদের কথা বললেন তিনি। কিন্তু কট্টর বাম সমর্থক কিংবা নেতৃত্বও কি সিপিএমের বদলে ভোটদানের ক্ষেত্রে বিজেপিকে বেছে নিয়েছিল? রাজ্য সরকার গঠনে ২০২১ বিধানসভার নির্বাচনেও কী সিপিএম বিজেপির উপরই ভরসা করেছিল? বাম প্রার্থী সুকৃতি ঘোষাল অবশ্য এই প্রশ্নে ঘুরিয়ে উত্তর দিয়ে বলেন, “মানুষ উন্নতমানের জীবনের জন্যে বিজেপিকে বিকল্প ভেবেছিল। কিন্তু বিজেপি বিকল্প হতে ব্যর্থ হয়। মানুষের সমস্যা বাড়ছেই। কিছু শিল্পপতির লাভ হচ্ছে।” এবার কী ‘ট্রেন্ড’ বদল হবে? রামে যাওয়া ভোট কি ফিরবে বামে? নিশ্চিত নন বাম প্রার্থীও। তিনি বলেন, “মানুষের মূল সমস্যা নিয়ে তাঁদের কাছে যাচ্ছি। মানুষের রুটিরুজির সমস্যা নিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলছি। আমাদের প্রতি মানুষের বিশ্বাস যোগ্যতা ফিরছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.