দিঘা সমুদ্রপাড়ে তৈরি হচ্ছে রথের কাঠামো। নিজস্ব চিত্র।
ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: দিন যত কাছে আসছে, ছবিটাও ঘুরে ফিরে আসছে। এক মাসেরও কম সময়ে রথযাত্রা। লোকে লোকারণ্য, ধুমধাম করে জগন্নাথদেব বেরচ্ছেন। ভক্ত লুটিয়ে পড়েছে পথে। পুরীর চেনা ছবি। এর মধে্যই খবর, রাজস্থান থেকে জগন্নাথদেবের (Jagannath) বিগ্রহ এসে পৌঁছেছে বাংলায়। এসেছে সুভদ্রা, বলভদ্রও। প্রস্তর মূর্তি। পুরীতে যা দেখা যায়, অবিকল সেই রূপ। নির্দিষ্ট স্থানে তাদের সংরক্ষণ করা আছে। সব ঠিকঠাক থাকলে সামনের বছর রথযাত্রায় জগন্নাথ মন্দিরের দ্বার উপচে ওঠার ছবি দেখা যাবে দিঘাতেও। বর্ষা কাটলে এ বছর একটা শুভ দিন দেখে শুধু অন্তর্যামীর প্রতিষ্ঠার অপেক্ষা।
দিঘায় (Digha) জগন্নাথধামকে সামনে রেখে বিশ্ব সংস্কৃতি চর্চার কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে। বিশ্বের সমস্ত প্রান্তের ধাম, সংস্কৃতি, লোকসংস্কৃতি সব কিছুর উপর গবেষণা সম্ভব এই কেন্দ্রে বসে। তার জন্য বিশ্বমানের গবেষক আবাস, গ্রন্থাগার, সংগ্রহশালা তৈরি হবে। বই হোক বা ডিজিটাল তথ্য সব কিছুর সম্ভার থাকবে সেই গ্রন্থাগারে। আর ধাম হিসাবে যে মাহাত্ম্য তার শিকড় পুরীর জগন্নাথ মন্দির। সেখানকার বিধি মেনেই পুজো হবে। সমুদ্র সৈকতের পাশের পুরী আর দিঘা এই দুই শহর বঁাধা পড়বে আত্মায়। মহাপ্রভুর ভোগ বিতরণের জন্য পুরীতে আছে নির্দিষ্ট জায়গা। দিঘার মন্দিরেও তার জন্য আলাদা ব্যবস্থা থাকবে। নির্দিষ্ট জায়গায় ভক্তদের জন্য ভোগ বিতরণের পরিকল্পনা রয়েছে। পুরীর মন্দিরের তুলনায় সেই ব্যবস্থা দিঘায় কিছুটা বাড়তিই রাখা হয়েছে।
পুরীর মন্দিরের একটি বিশেষত্ব হল সেখানকার ধ্বজা। প্রতিদিন যার পরিবর্তন হয়। ধ্বজার বদলের সেই প্রক্রিয়া বিস্মিত করে দেয় ভক্তদের। মন্দিরের গা বেয়ে সোজা উপরে উঠে যান ৩ জন। কারও মুখ থাকে সমুদ্রের দিকে, কেউ মন্দিরের দিকেই। চুড়োয় উঠে ধ্বজা বদলে সমুদ্র-আরতি সেরে নিচে নামা। শোনা যায়, বংশ পরম্পরায় সেই কাজ হয়। তার জন্য ছোট থেকেই বিশেষ প্রশিক্ষণের মধে্য দিয়ে যান সেই বংশের সন্তানরা। এখনও পর্যন্ত যা খবর, ধ্বজা বদল হবে রোজই। তা অবশ্য হবে অন্য প্রক্রিয়ায়।
মন্দির নির্মাণের পরিকল্পনা সামনে আসতেই পুরীর বিগ্রহের ছবি রাজস্থানের শিল্পীদের পাঠিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তখনই সেখানকার শিল্পীরা সেই প্রস্তর মূর্তি তৈরির কাজে লেগে পড়েন। বিগ্রহ সম্পূর্ণ হয়ে রাজে্য পৌঁছনোর পর থেকেই তা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে। দিঘার মন্দির সম্পূর্ণ হলে নির্দিষ্ট সময় মহাপ্রভুর প্রতিষ্ঠা হবে। পরের বছর নতুন রথে চড়ে জগন্নাথ যাবেন মাসির বাড়ি। পুরনো যে জগন্নাথ মন্দির রয়েছে, সেটিই জগন্নাথের প্রতীকী মাসির বাড়ি বলে ঠিক হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.