ফাইল ছবি।
অর্ণব দাস, বারাসত: গর্ভাবস্থায় দেদার নেশা! আগত সন্তানের কথা ভেবেও একবিন্দু সংযত হয়নি। জন্মের একমাস পরই সন্তানের মৃত্যু হয়। তাতেও অবশ্য হুঁশ ফেরেনি তাঁর। পিসিশাশুড়িকে খুনের ঘটনায় ধৃত মধ্যমগ্রামের ফাল্গুনী ঘোষকেই সন্তানের মৃত্যুর জন্য দায়ী করলেন তার শ্বশুর সুবল ঘোষ। এদিকে, শুক্রবার টি-আই প্যারেডের আবেদন sমঞ্জুর করেছে বারাসত আদালত। বারাসত জেলা পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খড়িয়া জানিয়েছেন, তদন্ত একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে। তাই এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়। ফাল্গুনী ও তার মা আরতিকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার পর জিজ্ঞাবাদ করে খুনে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা যাবে বলে মনে করছেন তিনি।
বোন সুমিতার খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া বউমা ফাল্গুনীর উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনের কথা আগেই সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ্যে আনেন শ্বশুর সুবল ঘোষ। শুক্রবার তিনি আরও চাঞ্চল্যকর কথা বললেন। গর্ভাবস্থাতেও ফাল্গুনী চূড়ান্ত অসংযমী জীবন জারি রেখেছিল, সেই কারণেই সন্তানকে হারাতে হয়েছে বলে মনে করেন সুবলবাবু। তাঁর বক্তব্য, “গর্ভাবস্থায় চিকিৎসকের কোনও পরামর্শই মানত না ফাল্গুনী। মদ্যপান ছাড়াও নিয়মিত গুটখা, সিগারেট খেত। তার এই জীবনযাপনের জন্যই জন্মানোর একমাস টানা চিকিৎসা করিয়েও নাতিকে বাঁচাতে পারিনি। এখন বুঝতে পারছি, ও সন্তান চাইত না বলেই এমনটা করেছে।” একমাত্র পুত্র সন্তানের মৃত্যুর পর থেকে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল ফাল্গুনীর স্বামী শুভঙ্কর। মাসখানেক আগেও অবসাদের সেই কথা বাবাকে জানিয়েছিল। সেখান থেকেই কি ফাল্গুনী-শুভঙ্করের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে এবং বিবাহবিচ্ছেদের পথে হাঁটে তাঁরা? এই প্রশ্নের উত্তর অবশ্য এখনও অজ্ঞাত।
গত মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি আহিরিটোলা ঘাটে ট্রলিবন্দি মৃতদেহ ফেলতে এসে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয় মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা ফাল্গুনী ঘোষ ও তার মা আরতি। জানা যায়, পিসিশাশুড়িকে খুনের পর দেহ টুকরো লোপাট করার উদ্দেশ্য ছিল ফাল্গুনীর। দোসর ছিল মা। সম্পত্তিগত বিবাদে ফাল্গুনীর এই কীর্তি বলেও জানায় সে। এমন হাড়হিম হত্যাকাণ্ডের কথা শুনে প্রাথমিকভাবে তদন্তকারীরা হতভম্ব হয়ে যান। পরে বুঝতে পারেন, একেবারে ঠান্ডা মাথায় খুন করা হয়েছে পিসিশাশুড়ি সুমিতা ঘোষকে। ধৃত ২ জন আপাতত জেল হেফাজতে রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার টি-আই প্যারেডের মাধ্যমে চিহ্নিত করা হবে ট্রলি নিয়ে যাওয়া ভ্যানচালক, দোলতলার ট্যাক্সি চালক -সহ কুমোরটুলি ঘাটের মা-মেয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ার সময়ের কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.