বাবুল হক, মালদহ: বৈশাখে হালখাতা, জ্যৈষ্ঠে জামাইষষ্ঠী। আষাঢ়ে রথযাত্রা। শ্রাবণে জন্মাষ্টমী, ভাদ্রে বিশ্বকর্মা পুজো…। বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ পুজো মণ্ডপে নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন শিল্পী। এক লহমায় সব পাব্বনের খোঁজ মিলেছে মালদহের মহানন্দ ক্লাবের মাতৃবন্দনায়।
[কার্তিক-গণেশকে ছাড়াই এই পুজোয় আসেন উমা]
মুখ্যমন্ত্রীর সাধের প্রকল্প কৃষকবাজার তৈরি করে গত বছর রাজ্য সরকারের বিশ্ব বাংলা পুরস্কার জিতেছিলেন তাঁরা। এবারও যেন জীবন্ত মডেলের মাধ্যমে বাঙালির বারো মাসের অনুষ্ঠানগুলিকে পুজো মণ্ডপে তুলে ধরে তাঁরা তাক লাগাতে চান। চৈত্রের চড়কপুজো, বিভিন্ন দেবদেবীর সং সেজেছেন ভক্তরা। এখানে দেখে মনে হবে জীবন্ত মানুষই যেন সেজে রয়েছেন। মণ্ডপে রয়েছে মাঘপঞ্চমীতে হাতেখড়ি অনুষ্ঠান। যেখানে পুরোহিত শিশুকে শ্লেটে অ-আ লেখাচ্ছেন। পাশে বসে রয়েছেন শিশুর মা। ফাল্গুনের দোলযাত্রার মডেলও অনবদ্য। সুন্দরী যুবতীর মুখে রং মাখাচ্ছেন এক যুবক। দূর থেকে রঙের পিচকারি চালাচ্ছে এক শিশু। আশ্বিন মাসের মহালয়ার তর্পণও একেবারে পুজো মণ্ডপে! ব্যাকগ্রাউন্ডে মালদহের মহানন্দা নদী। সাহাপুর সেতুও স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। অগ্রহায়ণ মাসের নবান্ন উৎসব উপলক্ষে পিঠে-পুলি তৈরিতে মগ্ন কৃষক পরিবারের মহিলারা। আষাঢ়ে রথের সামনে ভক্তদের ভিড়। আস্ত একটা দোকানের হালখাতার আয়োজন। সামনে খরিদ্দাররা মিষ্টিমুখে ব্যস্ত। কার্তিক মাসে দেওয়ালি ও কালীপুজোও দেখা যাবে মণ্ডপে। প্রাণজুড়ানো থিম। জীবন্ত মডেলের সমাহার। আর এই নিখুঁত শিল্পকর্মের কৃতিত্ব যার পাওয়ার কথা তিনি জেলার প্রখ্যাত মৃৎশিল্পী রাজকুমার পণ্ডিত।
[দুর্গা মণ্ডপে ‘সবথেকে বড়’ গণেশ, চ্যালেঞ্জ জলপাইগুড়ির]
মালদহ শহরের দক্ষিণ প্রান্তে মাধবনগরের অদূরেই এই মহানন্দা ক্লাব ও লাইব্রেরি। এবার ৪৫ তম বর্ষে এটাই দর্শনার্থীদের জন্য তাদের উপহার। গত বছর আস্ত একটা কিষান মাণ্ডি বা সবজি বাজারকেই মণ্ডপে তুলে এনেছিল এই ক্লাব। যা সাড়া ফেলে দিয়েছিল রাজ্য জুড়ে। শিল্পী ছিলেন এই রাজকুমার পণ্ডিতই। সেই কিষান মাণ্ডির থিম এবার কলকাতা ও মুর্শিদাবাদে গিয়েছে। শিল্পীও তিনি। মহানন্দা ক্লাবে এবার তিনি বারো মাসে তেরো পার্বণ থিমকে ফুটিয়ে তুলেই দর্শনার্থীদের নজর কাড়বেন বলে উদ্যোক্তাদের দাবি। সম্পাদক মদন ঝা বলেন, “বন্যার জন্য বাজেট কমাতে হয়েছে। গতবার ১৫ লক্ষ টাকা বাজেট ছিল, এবার মাত্র ৭ লক্ষ টাকা। এতেই জেলার অন্যদের আমরা টেক্কা দেব।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.