মালদহে দাদার সাক্ষ্যে দোষী ভাই আসিফ মহম্মদ। নিজস্ব চিত্র
বাবুল হক, মালদহ: মা-বাবা, বোন ও ঠাকুমাকে হত্যার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত বাড়িরই ছোট ছেলে! কালিয়াচকের সেই আসিফ মহম্মদের ফাঁসির আদেশ দিল মালদহ জেলা আদালত। মামলার শুনানি শেষে শনিবার এই রায় দেন মালদহ জেলা জজ শুভায়ু বন্দ্যোপাধ্যায়।
আসিফ তার মা-বাবা, বোন ও ঠাকুরমাকে খুন করে বাড়িতেই চৌবাচ্চা বানিয়ে দেহগুলি লুকিয়ে রেখেছিল। মামলার রাজসাক্ষী ছিলেন আসামি আসিফের দাদা আরিফ। মালদহের কালিয়াচক থানার ১৬ মাইল গ্রামে ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও তার ১১০ দিন পর বাড়িতে পুঁতে রাখা দেহগুলি উদ্ধার হয়। আসিফ যাদের খুন করে তাঁরা হলেন ৭২ বছরের ঠাকুমা আলেক নুর বেওয়া, মা ৩৬ বছর বয়সি ইরা বিবি, ১৬ বছরের রোন রিমা খাতুন এবং ৫৩ বছর বয়সি বাবা জাওয়াদ আলি। ঠান্ডা পানীয়র সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে বাবা, মা, দাদা, বোন এবং দিদাকে খাওয়ায় আসিফ। তাঁরা অচৈতন্য হয়ে পড়লে তাঁদের মুখে সেলোটেপ লাগিয়ে দেয় সে। বেঁধে দেওয়া হয় হাত-পা। আগে থেকেই বাড়ির গুদামঘরে একটি চৌবাচ্চা তৈরি করেছিল আসিফ। অল্প অল্প করে তাতে জলও জমায় সে। সেই গুদামঘরের চৌবাচ্চায় ফেলে দেওয়া হয় প্রত্যেককে। তবে দাদা আরিফের মুখের সেলোটেপ কোনওভাবে খুলে গেলে ভাইয়ের সঙ্গে ধস্তাধস্তি, মারামারি করে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে তিনি কলকাতায় চলে যান।
এই ঘটনার সাড়ে তিন মাস পর আরিফ এলাকায় ফিরে এসে কিছু মানুষের সাহায্য নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন। পুলিশ তড়িঘড়ি তদন্ত শুরু করে সেই বাড়ি থেকে চারটি পচাগলা দেহ উদ্ধার করে। ঘটনায় অভিযুক্ত বাড়ির ছোট ছেলে আসিফ মহম্মদকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তারপর আসিফের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। টাকাপয়সা, সম্পত্তির লোভেই আসিফ নিজের বাবা-মা সহ পরিবারের চার সদস্যকে খুন করে। এই মামলায় সরকার পক্ষের আইনজীবী ছিলেন বিভাস চট্টোপাধ্যায়। শুক্রবার আসিফকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এদিন তাকে আদালতে হাজির করা হয়। ফাঁসির রায় ঘোষণা করেন জেলা জজ শুভায়ু বন্দ্যোপাধ্যায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.