ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে পথে নেমে বিভিন্ন জায়গায় পদযাত্রায় শামিল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো। কিন্তু তাঁর পদযাত্রার জন্য কোনও জরুরি পরিষেবা আটকে নেই মোটেই। তা মুখ্যমন্ত্রীর নিজেরই নীতি নয়। তাই বৃহস্পতিবার মধ্যমগ্রাম থেকে বারাসত পর্যন্ত পদযাত্রার মাঝে রাস্তায় অ্যাম্বুল্যান্স দেখেই থামিয়ে দিলেন হাঁটা। বৃহৎ মিছিলকে একপাশে সরিয়ে পথ করে অ্যাম্বুল্যান্স যাওয়ার। আর এভাবেই তিনি একজন নাগরিকের কর্তব্য পালনের পাশাপাশি জবাব দিয়ে দিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে। যিনি দিন দুই আগে অ্যাম্বুল্যান্সকে রাস্তা ছাড়ার বদলে তা আটকে দিয়েছিলেন।
কোনও পরিস্থিতিতেই কোনও জরুরি পরিষেবা আটকে রাখা যাবে না। এই মর্মে দলের নেতা-কর্মী এবং পুলিশ প্রশাসনকে কড়া বার্তা দিয়ে রেখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে প্রবল যানজটের সময় তিনি নিজের কনভয় থামিয়ে যাত্রীবাহী বাস, গাড়ির জন্য রাস্তা করে দিয়েছেন, এমন ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত আছে। এবার মিছিল থামিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সকে ছেড়ে দিলেন রাস্তা। এটাই একজন সাধারণ নাগরিকের কর্তব্য। রাজ্যের মুখ্য প্রশাসক হলেও, তিনি তো আদতে জননেত্রী। তাই ভিভিআইপি-র আসনে বসেও কর্তব্য ভোলেননি। আজও ফের সেটাই প্রমাণ করলেন। আর মমতার এই পদক্ষেপই যে রাজ্য বিজেপি সভাপতির মুখের উপর জবাব, তা মনে করছেন তৃণমূলের একাংশ।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (CAA) সমর্থনে সোমবার কৃষ্ণনগরে কর্মসূচি ছিল গেরুয়া শিবিরের। জেলা প্রশাসনিক ভবনের সামনে একটি সভাও করা হয়। সেখানে বক্তব্য রাখছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এমন সময় একটি অ্যাম্বুল্যান্স সভাস্থলের কাছাকাছি এসে পৌঁছয়। ওই অ্যাম্বুল্যান্সে সেই সময় রোগী ছিলেন। তবে সভার জেরে এলাকায় তীব্র যানজট হওয়ায় রাস্তা দিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছিল না। সভায় যোগদানকারী কেউই ওই অ্যাম্বুল্যান্সটিকে রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করেনি। অ্যাম্বুল্যান্স আটকে পড়ার ঘটনাটি নজর এড়ায়নি বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষেরও। তবে তা সত্ত্বেও অ্যাম্বুল্যান্স যাওয়ার জন্য রাস্তা করে দেওয়ার কোনও উদ্যোগ নেননি। পরিবর্তে তিনি মঞ্চ থেকে বলেন, ‘‘এখান দিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না। লোকে রাস্তায় বসে রয়েছে। ডিসটার্ব হয়ে যাবে। ঘুরিয়ে অন্য দিক দিয়ে নিয়ে যান।’’ এনিয়ে সমালোচনা শুরু হতেই আরও মরিয়া হয়ে দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, ‘‘অ্যাম্বুল্যান্স আটকেছি, আবারও আটকাব।’’ তিনি এও অভিযোগ তুলেছিলেন যে ওই অ্যাম্বুল্যান্স মাদক পাচার হচ্ছিল, তা তিনি বুঝতে পেরেই রাস্তা ছাড়েননি। আর তার জবাবই আজ মিছিল থামিয়ে তাঁকে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.