ছবি: প্রতীকী
সৌরভ মাঝি, বর্ধমান: চলন্ত ট্রেনে শ্লীলতাহানির শিকার হলেন এক বিদেশি পর্যটক। তবে সহযাত্রী ও আরপিএফের প্রচেষ্টায় ধরা পড়ে গিয়েছে অভিযুক্ত। রবিবার গভীর রাতে ডাউন জামালপুর-হাওড়া এক্সপ্রেসে ঝাড়খণ্ডের পাকুড়ে ঘটনাটি ঘটে। সোমবার সকালে ট্রেনটি বর্ধমান স্টেশনে পৌঁছলে অভিযুক্তকে বর্ধমান জিআরপির হাতে তুলে দেওয়া হয়। বিদেশি ওই তরুণী পর্যটক বর্ধমান জিআরপিতে অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম আরশাদ হোসেন। বাড়ি ঝাড়খণ্ডের পাকুড়ের মেধপাড়ায়। কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী ওই যুবক। মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুরে কর্মরত।
[ উচ্চ মাধ্যমিকে সাফল্য পেলেও থমকে বিউটির শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন ]
ধৃতকে এদিনই বর্ধমান আদালতে পেশ করে জিআরপি। সিজেএম রতনকুমার গুপ্তা ধৃতকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার ফের তাকে আদালতে পেশ করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এদিনই চতুর্থ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দি নথিভুক্ত করানো হয়েছে ওই বিদেশিনীর। ধৃতের আইনজীবী স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় আজ আদালতে জানান, ভাষাগত সমস্যার কারণে ঘটনাটি ঘটেছে। শ্লীলতাহানির অভিযোগ ঠিক নয়। যদিও সরকারি আইনজীবী নারদকুমার ভুইয়াঁ আদালতে দাবি করেন, বিদেশি পর্যটকের শ্লীলতাহানি করা হয়েছে। ধৃত জামিন পেলে বিদেশে দেশের সম্মান নষ্ট হবে। দেশের বিচারব্যবস্থার প্রতি বিরূপ ধারণা তৈরি হবে বিদেশে। ওই তরুণী আদালত থেকে বেরনোর সময় জানান, প্রয়োজনে ভিডিও কনফারেন্সে তিনি ও তাঁর সঙ্গী মামলায় সাক্ষ্য দেবেন।
জিআরপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বিদেশি তরুণী তাঁর পুরুষ সঙ্গী ফ্রান্সের বাসিন্দা। তাঁরা ভারত ভ্রমণে আসেন কিছুদিন আগে। বিভিন্ন জায়গা ঘুরে তাঁরা ডাউন জামালপুর এক্সপ্রেস ট্রেনে চড়ে হাওড়া যাচ্ছিলেন। তাঁরা এস-৮ কামরায় উঠেছিলেন। যদিও তাঁদের রিজার্ভেশন ছিল না। ভিনদেশি ওই তরুণ-তরুণী গেটের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। ওই কামরাতেই ছিল আরশাদ। তার পাকুড় স্টেশনে নামার কথা ছিল। ট্রেনটি পাকুড়ে থামার পর ব্যাগপত্র নিয়ে গেটের কাছে আরশাদ এলে ওই বিদেশি তরুণী সিট ফাঁকা হয়েছে কিনা জানতে চান। সিট ফাঁকা হয়েছে জানায় আরশাদ। তখন সিট দেখিয়ে দেওয়ার জন্য ওই তরুণী আরশাদকে বলেন। আরশাদ সিট দেখাতে নিয়ে যায়।
[ মায়েদের নাম-বিভ্রাটে সদ্যোজাতের হাতবদল! পুলিশের দ্বারস্থ রোগীর পরিবারের ]
ওই তরুণীর অভিযোগ, সিট দেখাতে নিয়ে গিয়ে পিছন থেকে আরশাদ ওই বিদেশিনীর শ্লীলতাহানি করে। প্রতিবাদ করলে আরশাদ তরুণীর বুকে ঘুসিও মারে বলে অভিযোগ। ওই বিদেশি তরুণী ও তাঁর সঙ্গীর চিৎকারে সহযাত্রীরা এগিয়ে আসেন। ট্রেনের আরপিএফ কর্মীরাও আসেন। আরশাদকে আটক করা হয়। তাদের পাকুড়ে নামতে দেওয়া হয়নি। পরে ট্রেন বর্ধমান স্টেশনে থামলে আরশাদকে জিআরপির হাতে তুলে দেওয়া হয়। রেলের এক আধিকারিক বলেন, “খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। তবে আরপিএফ দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.