চিকিৎসার জন্য এপার বাংলায় আসা বাংলাদেশি প্রৌঢ়
জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: গায়ে জড়ানো মলিন শাল। মাথায় মাঙ্কি টুপি। চোখেমুখে উদ্বেগ রয়েছে সীমান্ত পেরিয়ে আসা প্রৌঢ়ের। বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে তিনি ও তাঁর পরিবার আতঙ্কিত। জমিজমা যে বিক্রি করে চলে আসবেন, এই মুহূর্তে তাও সম্ভব নয়। বাংলাদেশ থেকে আসা প্রৌঢ় বনগাঁর পেট্রাপোল সীমান্ত পেরিয়ে এসে এমনই বললেন।
আজ ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয় দিবস। আর এদিনই বাংলাদেশ থেকে ভারতে এলেন সুখেন সরকার। বাংলাদেশের ঝিনাইদহতে তাঁর ভিটেমাটি, জমিজমা। বয়স ৭০-এর ঘরে। শরীরে বাসা বেঁধেছে বেশ কিছু রোগ। সেই রোগের চিকিৎসার জন্যই এদেশে আসা। ভারতের মাটিতে পা দিলেও মন পড়ে আছে বাংলাদেশে। সেই দেশের পরিস্থিতি ভালো নয়। রাজনৈতিক অস্থিরতা তুঙ্গে। সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর লাগাতার আক্রমণ চলছে। তাঁর অবর্তমানে পরিবার-পরিজনদের নিয়েও এখন দুর্ভাবনার শেষ নেই সুখেন সরকারের।
বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ভুলে যায়নি বিজয় দিবসে ভারতের অবদান। ভারত না থাকলে স্বাধীনতা পাওয়া যেত না। সেই কথাই বললেন প্রৌঢ়। “এরা না থাকলে কি ওরা স্বাধীন হতে পারত? কিন্তু ওরা তো সেইসব মানে না।” পরিষ্কার বললেন তিনি। তবে এখন পরিস্থিতি ভালো নয়। সব সময়ই আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, “আমরা হিন্দু মানুষ। আমার কি কোনও কথার দাম আছে নাকি বাংলাদেশে?”
মাস কয়েক ধরে চলা বাংলাদেশের পরিস্থিতিতে দেশ ছেড়ে আসার ভাবনাও এসেছিল তাঁর মধ্যে। কিন্তু পরক্ষণেই সেই ভাবনা থেকে সরে আসেন। তিনি বলেন, “এখন জমিজমা বিক্রি করা যাবে না। দেশের পরিস্থিতি ভালো না। জমি বিক্রি করার কথা জানতে পারলে রাতের অন্ধকারে এসে সব নিয়ে যাবে।” আর খুব একটা কথা বাড়াতে চাননি তিনি। এদেশে চিকিৎসা করিয়ে ফের তাঁকে নিজের দেশেই তো ফিরতে হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.