সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: নিজের স্ত্রী আর আড়াই বছরের সন্তানকে কাছে পেতে চেয়েছিলেন বছর পঁয়ত্রিশের শংকর দাস। কিন্তু মাস খানেক হয়ে গেলেও শ্বশুরবাড়ি থেকে স্ত্রী আর সন্তানকে আসতে না দেওয়ায় সেই কষ্ট সহ্য করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যার পথই বেছে নিলেন ওই যুবক।
বৃহস্পতিবার দুপুরে দুর্গাপুরের নিউটাউনশিপ থানার পুলিশ ঘরের টালি ভেঙে শংকরের মৃতদেহ উদ্ধার করে। শংকরের বউদি রেখা দাসের অভিযোগ, মাস খানেক হল শংকরের শাশুড়ি ওর স্ত্রী আর আড়াই বছরের শিশুকে বিহারের আকবরপুরে বাপের বাড়িতে কয়েকদিন কাটিয়ে আসুক এই বলে নিয়ে চলে যায়। অভিযোগ, এরপর থেকেই শংকরের শ্বশুরবাড়ির লোকজন স্ত্রী আর সন্তানকে আসতে দেয়নি শংকরের কাছে, উলটে শংকর ফোন করলে তাঁকে স্ত্রী আর সন্তানের সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হত না। এই নিয়ে শংকরের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হত ফোনে। এরই মধ্যে শংকর জানতে পারেন, ছেলের নাকে কিছু ঢুকে গেছে। মন ঠিক রাখতে পারেননি তিনি।
বৃহস্পতিবার সকালেও শংকর ফোনে শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের বলেন ওদের দিয়ে যান, বাচ্চাকে ডাক্তার দেখাব। কিন্তু কথার উত্তর দেওয়া তো দুর অস্ত, অভিযোগ তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয় ফোনের ওপার থেকে। তখনি দরজা লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন শংকর। কিন্তু ঘরের লোক বুঝতে পেরে যাওয়ায় সেই যাত্রায় বেঁচে যান তিনি। শেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘরে মা বউদির সঙ্গে ঝগড়া করার ছুতোয় অভিনয় করে দরজা লাগিয়ে দেন যুবক। ঘন্টা খানেক কোনও সারা শব্দ না পেয়ে পুলিশকে ফোন করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এরপর পুলিশ এসে টালি ভেঙে যুবকের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে।
মৃতের আত্মীয়দের অভিযোগ, এর আগেও একবার এইরকম ঘটনা ঘটেছিল। সেইবার স্ত্রীকে আনতে গিয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজনরা ব্যাপক মারধর করেছিল শংকরকে।এমএএমসির উত্তরপল্লির বাসিন্দাদের বক্তব্য, কোনও অশান্তি ছিল না এই ঘরে। কিন্তু জামাই পেশায় রংমিস্ত্রি, এটা মেনে নিতে পারত না শংকরের শ্বশুরবাড়ি।
ছবি: উদয়ন গুহরায়
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.