জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: ফুলশয্যার বিছানা সাজানো হয়ে গিয়েছিল। অতিথি আপ্যায়নের জন্য তৈরি খাবার-দাবারও। কিন্তু হঠাৎই ছন্দপতন। প্রেমিকাকে ছেড়ে অন্য মেয়ের হাত ধরে ছাদনাতলায় বসায় বউভাতের আসর থেকে সোজা শ্রীঘরে যুবক।
ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Parganas) গাইঘাটা থানার দেবীপুর এলাকায়। অভিযুক্ত প্রেমিকের নাম অভিজিৎ দাস। একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত তিনি। প্রেমিকার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিবেশী মৌমিতা সরকারের সঙ্গে অভিজিতের বছর আটেক ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। নিয়মিত ঘুরতে যাওয়া খাওয়া-দাওয়া মেলামেশা সবকিছু চলছিল তাঁদের। মাস তিনেক আগে প্রেমের ছন্দপতন হয়। প্রেমিকা বলেন, অভিজিৎ জানিয়েছিলেন বাবার সঙ্গে দিঘায় যাচ্ছেন। কিন্তু বাড়ি ফিরেই প্রেমিকার সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে দেন। তারপর প্রেমিকা ও তাঁর পরিবার খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারেন, অভিযুক্ত শিলিগুড়ি এলাকায় গোপনে রেজিস্ট্রি ম্যারেজ সেরে ফেলেছেন। ওই যুবতীকে দেবীপুর এলাকায় এনে ২০ এপ্রিল সামাজিকভাবে বিয়েও করেছেন। এরপরই রাতে গাইঘাটা থানায় প্রেমিকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন প্রেমিকা। অভিযোগ, মৌমিতার সঙ্গে দীর্ঘদিন প্রেম করে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিক বার সহবাস করেন অভিযুক্ত। তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করে অন্য মেয়েকে বিয়ে করেছেন অভিজিৎ। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনার তদন্তে নামে।
পুলিশ জানিয়েছে, তারা জানতে পারে অভিযুক্ত শুক্রবার রাতে গোবরডাঙার একটি বাড়িতে বসে বউভাতের অনুষ্ঠান করছেন। সেই আসর থেকেই তাঁকে গ্রেপ্তার করে শনিবার সকালে বনগাঁ মহকুমা আদালতে পাঠানো হয়। মৌমিতার কথায়, “অভিজিৎ আমাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বহুবার শারীরিক সম্পর্ক করেছে৷ দু’বার গর্ভপাত করাতে হয় আমাকে। আমি ওকে আর বিয়ে করতে চাই না। আমি চাই আইনের মাধ্যমে ওর উচিত শিক্ষা হোক।”
যদিও ছেলের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বাবা অচিন্ত্য দাস। বরং পালটা তিনি বলেন, “ওই মেয়েটিকে (মৌমিতা) আমরা জিজ্ঞাসা করেছিলাম আমার ছেলেকে বিয়ে করতে চায় কি না। বিয়ে করবে না জানিয়ে কয়েক লক্ষ টাকা দাবি করেছিল। মিথ্যা সহবাসের অভিযোগ তুলে আমার ছেলেকে ফাঁসানো হচ্ছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.