অভিষেক চৌধুরী, কালনা: স্ত্রীকে খুনের পর দেহ লোপাট করতে তা বস্তাবন্দি করে গোয়ালঘরের মাচায় তুলে রেখেছিল স্বামী। কিন্তু শেষরক্ষা আর হল না। বৃহস্পতিবার রাতে সেখান থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় প্রতিবেশীদের সংশয়ের মুখে পড়ে গৃহস্বামী। এরপর পুলিশে খবর দেওয়া হলে তাঁরা এসে মৃতদেহটি উদ্ধার করে। রোমহর্ষক এই ঘটনায় চাঞ্চল্য পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরের (Manteswar) কাইগ্রাম এলাকায়। স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
ঘটনার সূত্রপাত দিন দুই আগে। কাইগ্রামের বছর আঠারোর ফুলকলি খাতুন ও বাবু শেখের মাত্র তিন মাসের দাম্পত্যে ঝগড়ঝাঁটি, অশান্তি। তার জেরেই এমন মর্মান্তিক ঘটনা। স্থানীয় সূত্রে খবর, ফুলকলির শ্বশুরবাড়ির তরফে বারবার বলা হচ্ছিল, ঘরের বউ ঝগড়ঝাঁটি করে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছে। সেইমতো বৃহস্পতিবার বাইক নিয়ে স্ত্রীকে খোঁজার জন্য বেরিয়েও পড়ে বাবু শেখ। তবে তার আগেই যদি সে স্ত্রীকে পরিকল্পনামাফিক খুন (Murder) করে দেহ লোপাটের ব্যবস্থা করেছিল। পুলিশ তদন্তে নেমে প্রাথমিকভাবে ঘটনা সম্পর্কে এমনই বুঝতে পেরেছে।
এদিকে, সকলের চোখে ধুলো দিয়ে বাবু শেখ দিনভর স্ত্রীকে খোঁজার অভিনয় করে রাতে বাড়িতে ফিরে আসে একাই। বৃহস্পতিবার আরও গভীর রাতের দিকে তাদের বাড়ির গোয়ালঘর থেকে দুর্গন্ধ পান প্রতিবেশীরা। তখনই সন্দেহ হয় তাঁদের। রাতেই খবর দেওয়া হয় মন্তেশ্বর থানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গোয়ালঘর ঘুরে দেখে আবিষ্কার করে, মাচায় একটি বস্তাবন্দি দেহ রাখা। তা উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, বাবু শেখই স্ত্রীকে খুন করেছে, বস্তাবন্দি দেহটি পাচার করে দেওয়া উদ্দেশ্য ছিল তার। বাবু শেখকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে খুন করে দেহ লোপাটের এত নিপুণ পরিকল্পনা দেখে চোখ কপালে দুঁদে গোয়েন্দাদেরও। জানা গিয়েছে, ফুলকলি ও বাবুর প্রেমের সম্পর্ক পরিণতি পায় মাত্র ৩ মাস আগে। একইগ্রামের দুই তরুণ-তরুণী বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়। কিন্তু তারপরই দাম্পত্য অশান্তিতে এমন মর্মান্তিক পরিণতি বছর আঠারোর ফুলকলি খাতুনের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.