তপন বন্দ্যোপাধ্যায়, বসিরহাট: লটারির টিকিট হাতাতে এক ভ্যানচালককে অপহরণ করে খুনের অভিযোগ। নৃশংস হত্যার পর বাঁশবাগানে দেহটি পুঁতে দেয় অভিযুক্তরা। ঘটনার প্রায় এক সপ্তাহ পর মাটি খুঁড়ে সেই দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। ইতিমধ্যেই ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় প্রধান অভিযুক্তের। বাকি অভিযুক্তেরা এখন পুলিশের হেফাজতে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ায়।
মৃত ব্যক্তির নাম অমরনাথ গায়েন (৫৮)। তিনি বাদুড়িয়ার পিঙ্গলেশ্বর এলাকার বাসিন্দা ভ্যান চালানোর পাশাপাশি লটারির পাইকারি ব্যবসাও করতেন। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, বসিরহাট থেকে লটারির টিকিট এনে বাদুড়িয়া এলাকায় খুচরো ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করতেন অমরনাথ। গত ২৬-মে বাড়ি থেকে ভ্যান নিয়ে তিনি বসিরহাটের জেলখানা মোড়ে লটারির টিকিট আনতে গিয়েছিলেন। এমনটাই দাবি পরিবারের। তবে সেদিনের পর থেকে অমরনাথের আর কোনও খোঁজ মেলেনি। বাড়ি ফেরেননি ওই ভ্যানচালক। মাঝে বেশ কয়েকটা দিন কেটে গিয়েছে। বাবার না ফেরায় চিন্তিত ছেলে রথীন গায়েন বাজুড়িয়া থানায় মিসিং ডায়েরিও করেন। এরপরই নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ। তারপরেও অমরনাথ গায়েনের কোনও খোঁজ মেলেনি।
এদিকে তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ঘটনার দিন প্রায় ১৪ লক্ষ টাকার লটারির টিকিট নিয়ে বাদুড়িয়ায় ফিরছিলেন অমরনাথ। আশঙ্কা, অমরনাথের অন্তর্ধানের নেপথ্যে লটারির টিকিটের কোনও যোগ রয়েছে। একে একে অমরনাথের ঘনিষ্ঠদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। তাঁর পূর্ব পরিচিত বাবলু মণ্ডল নামে বাদুড়িয়ার সিমলা গ্রামের এক বাসিন্দাকেও জেরা করা হয়। অবশেষে নিখোঁজের ঘটনার সামান্য সূত্র পায় পুলিশ। জানতে পারে, এই বাবলু মণ্ডলই অমরনাথের লটারির টিকিট হাতিয়ে নিয়েছে। তারপর প্রমাণ লোপাটের জন্য স্বয়ং অমরনাথ গায়েনকে গায়েব করে দিয়েছে। এরপরেই বাবলু মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই সঙ্গে আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন অসুস্থতাজনিত কারণে বাবলু মণ্ডলের মৃত্যু হয়। জেরার ভিত্তিতে বাঁশ বাগান থেকে দেহ উদ্ধার হয়। বাকিরা এখনও বিচারাধীন রয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.