ছবি: প্রতীকী
রাজা দাস, বালুরঘাট: স্কুলের রান্না ঘরে তালা ঝুলিয়েছে জমিদাতা৷ আর তার জেরে চার মাস বন্ধ মিড-ডে মিল৷ অভিযোগ, স্কুলবাড়ি তৈরিতে জমির বিনিময়ে পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়া সরকারি প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়ার জেরেই এই বিপত্তি৷ চার মাস মিড-ডে মিল না পেয়ে চূড়ান্ত সমস্যায় পড়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বংশীহারি থানার মহাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের ধুমসাদিঘী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা৷ ফলে, খাবার না পেয়ে দিনে দিনে বাড়ছে স্কুলছুটের সংখ্যা৷
জানা গিয়েছে, এলাকায় স্কুলের জন্য বেশ কয়েক বছর আগে হোপনা মার্ডি নামে এক আদিবাসী ব্যক্তি ৪ শতক জমি দান করেছিলেন স্কুল শিক্ষা দপ্তরকে৷ ওই জায়গার উপর তৈরি হয়, ধুমসাদিঘী প্রাথমিক স্কুল৷ বর্তমানে পাঁচ জন শিক্ষিক ও ৬৩ জন পড়ুয়া রয়েছে স্কুলে৷ পড়াশোনা থেকে মিড-ডে মিলও চলত ভালভাবেই৷ কিন্তু, চলতি বছরের ২২ মার্চ স্কুলের রান্নাঘরে জমিদাতা হোপনা মার্ডির পরিবারের লোকজন তালা ঝুলিয়ে দেয়। তাঁদের দাবি, জমিদাতার ফলক বসাতে হবে স্কুলে। এছাড়াও পরিবারের একজনকে দিতে হবে চাকরি। পাশাপাশি মিড-ডে মিল রান্নার কাজে আদিবাসী মহিলাদের নিয়োগ করতে হবে।
প্রথমে এই হুমকির আমল দেয়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ। এরপর ২২ মার্চ স্কুলের রান্না ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেয় হোপনা টুডুর পরিবার। এদিকে তালা মারা-সহ ওই পরিবারের অন্যান্য দাবির বিষয়গুলি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানায় স্কুলের শিক্ষকরা। দীর্ঘ চার মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও সমস্যার কোন সমাধান হয়নি। ফলে স্কুলে পুরোপুরি ভাবে বন্ধ রয়েছে মিড-ডে মিল। এদিকে মিড-ডে মিল বন্ধ থাকায় পড়ুয়ার সংখ্যা তলানিতে এসে ঠেকতে শুরু করেছে। এমত অবস্থায় পড়ুয়াদের পুনরায় স্কুলমুখী করতে মিড-ডে মিল চালু করার দাবি জানিয়েছেন স্কুলের শিক্ষকরা৷
স্কুলের শিক্ষক সুমন বসাক জানান, স্কুলের জমিদাতার পরিবারের লোকজন প্রথমে এসে হুমকি দেয় তাঁদের। দাবি করেন, স্কুলে হোপনা মার্ডির নামে ফলক বসাতে হবে বলে। এছাড়া স্কুলের মিড-ডে মিল রান্নার জন্য আদিবাসীদের নিয়োগ, পরিবারের একজনকে চাকরির দাবি তাঁদের। প্রথমে হুমকি দিলেও, পরে স্কুলের রান্নাঘরে তালা মেরে দিয়ে চলে যান তারা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও সমস্যার সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ সেখানকার শিক্ষকদের। বংশীহারি ব্লকের বিডিও শুভদীপ দাস জানান, মিড-ডে মিল রান্না নিয়ে ধুমসাদিঘী স্কুলে একটা সমস্যা রয়েছে তা তারা জানেন। সমস্যা সমাধানে বার দুয়েক ওই পরিবারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। প্রয়োজনে ফের আলোচনায় বসবেন বলে জানিয়েছেন বিডিও৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.