দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: এক দশক আগে মাতলা নদীর জল বাঁধ ভেঙে প্লাবিত করে দিয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির দক্ষিণ গরানকাটি গ্রামকে। এরপর থেকেই নদী বাঁধ লাগোয়া ম্যানগ্রোভ অরণ্য রক্ষণাবেক্ষণে নজর দিয়েছিল এলাকার বাসিন্দারা। ভেড়ি তৈরি করতে এবার সেই ম্যানগ্রোভ কাটতে শুরু করেছে গ্রামবাসীদেরই একাংশ। প্রতিবাদ করতে গিয়ে হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে স্থানীয়দের। কী হবে ভবিষ্যৎ, সেই আশঙ্কায় স্থানীয়রা।
দীর্ঘদিন ধরেই ম্যানগ্রোভ রক্ষণাবেক্ষণে বিশেষ নজর দিয়েছিল কুলতলির গরানকাটির বাসিন্দারা। হাতেনাতে তার ফলও মিলেছে। বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে গ্রামকে রক্ষা করেছে এই ম্যানগ্রোভ। সেই ম্যানগ্রোভের প্রাচীর ভেদ করে প্রবল ঘূর্ণিঝড় বুলবুলও খুবএকটা ক্ষয়ক্ষতি করতে পারেনি নদী লাগোয়া ওই গ্রামের বাসিন্দাদের। সেই ঘটনার কয়েকদিনের ব্যবধানেই চার নম্বর দক্ষিণ গরানকাটির বাসিন্দাদের একাংশ শামিল হল ম্যানগ্রোভ ধ্বংসে। গ্রামের বাসিন্দাদের ভয় দেখিয়ে কেটে ফেলা শুরু হয়েছে বাণী, কেওড়া-সহ বিভিন্ন গাছ। বুধবার ঘটনাস্থলে গেলে দেখা যায় যে, তখনও পর্যন্ত সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে বড় বড় গাছগুলির অংশ।
যারা গাছ কাটার প্রতিবাদ করেছিলেন তাঁরা ভয়ে কার্যত সিঁটিয়ে রয়েছেন। অভিযোগ, চিংড়ি চাষের জন্য ভেড়ি তৈরির নামে যারা গাছ কাটছে ক্রমাগত প্রতিবাদীদের প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে তাঁরা। তাই আপত্তি থাকলেও মুখ খুলতে পারছেন না। স্বাভাবিকভাবেই গ্রামবাসীদের একাংশের আশঙ্কা আগামী কয়েক দিনের মধ্যে শুরু হয়ে যাবে ভেড়ি তৈরির কাজ। ম্যানগ্রোভ বাঁচাতে বাধ্য হয়ে বারুইপুর রেঞ্জের পিয়ালী বিট আধিকারিকদের দ্বারস্থ হচ্ছেন গ্রামবাসীদের একাংশ। এবিষয়ে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার বিভাগীয় বনাধিকারিক সন্তোষ জি আর বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে আসা মাত্রই বনকর্মীরা এলাকায় গিয়ে সরেজমিনে খতিয়ে দেখেছেন। আমরা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.