Advertisement
Advertisement
Serampore

‘চোখে চোখে কথা বলো, মুখে কিছু বোলো না…’, পরিণতি পেল নিঃশব্দ প্রেম

প্রতিবন্ধকতা জয় করে এক হল চারহাত।

Marriage of mute and deaf couple in Serampore

নবদম্পতি ইন্দ্রনীল ও মহুয়া মুখোপাধ্যায়।

Published by: Subhankar Patra
  • Posted:December 17, 2024 6:39 pm
  • Updated:December 17, 2024 6:39 pm  

সুমন করাতি, হুগলি: ‘চোখে চোখে কথা বলো, মুখে কিছু বোলো না…’। সেই কবেই শিল্পীর কথায়, সুরে প্রাণ পেয়েছে চিরদিনের এই প্রেমের গান। ঠিক যেন পূর্বরাগের লক্ষণ। কিন্তু, এটাই সত্যি শ্রীরামপুরের বেল্টিংবাজারের বাসিন্দা ইন্দ্রনীল এবং কলকাতার বাসিন্দা মহুয়ার ক্ষেত্রে। তবে, পূর্বরাগ নয়-গোটা প্রেমপর্বই চলেছে তাঁদের চোখে-চোখে কথায়। ইশারায় প্রেমালাপ হলে কী হবে! মনের কথা কি তাতে বাঁধা থাকে? ইশারাতেই মন দেওয়া-নেওয়ার মতো নেওয়া হয়ে গিয়েছিল সারাজীবন হাতে হাত রেখে কাটিয়ে দেওয়ার শপথও। তাই তো, শরীরে-মনে যাবতীয় প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে চারহাত এক হল বিয়ের মরশুমে।

শ্রীরামপুরের ইন্দ্রনীল ও কলকাতার মহুয়া। দুজনই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন। মূক ও বধির। কিন্তু, দেখে বোঝার উপায় নেই যে আর পাঁচটা রোমান্টিক কাপলের সঙ্গে তাঁদের পার্থক্য রয়েছে। মাত্র ৮ মাস বয়সে চিকিৎসার ভুলের কারণে শ্রবণশক্তি হারিয়ে ফেলেন ইন্দ্রনীল। বর্তমানে তাঁর বয়স ৩২। সেদিনের ঘটনার পর থেকে তিনি কথা বলাও শেখেননি। পরিবারের লোকজন ছেলেকে স্বাভাবিক করার বহু চেষ্টা করলেও তাতে খুব একটা লাভ হয়নি। তবে, তাতে থমকে থাকেনি তাঁর জীবনযাত্রা। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন হয়েও তিনি জীবনের প্রতিটা লড়াই লড়েছেন একজন সাধারণ মানুষের মতো। পড়াশোনা থেকে খেলাধুলা-সবেতেই নজরকাড়া পারফরম্যান্স ইন্দ্রনীলের। শ্রীরামপুর কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে বর্তমানে তিনি একটি বেসরকারি কোম্পানিতে ম্যানেজার পোস্টে কাজ করেন।

Advertisement

চাকরি করতে গিয়েই ইন্দ্রনীল খুঁজে পান তাঁর মতোই আরও একজনকে। তাঁর স্ত্রী মহুয়াও ছোট থেকে মূক ও বধির। সীমাবদ্ধতা দমিয়ে রাখতে পারেনি তাঁকেও। পড়াশোনার পাশাপাশি, বাস্কেটবল খেলায় দক্ষ তিনি। এরপর কর্মসূত্রে ইন্দ্রনীলের সঙ্গে পরিচয়।  এবং ক্রমে মন দেওয়া-নেওয়া। দুজনের নিঃশব্দ ভালোবাসার পরিণতি পেল চলতি মাসে। আগুনকে সাক্ষী রেখে হাতে-হাত রেখে সারা জীবন একসঙ্গে চলার শপথগ্রহণ করলেন তাঁরা। আর, ছকভাঙা এই দম্পতির আগামী জীবনের জন্য তাঁদের দুহাত ভরে আশীর্বাদ জানালেন পরিবার, আত্মীয়, শুভানুধ্যায়ীরা।

দুজনের কথাবার্তা হয় ইশারাতে। অনেক সময় একে অপরের দিকে তাকিয়েই তাঁরা দুজন দুজনের মনের কথা বুঝতে পেরে যান। বাইরের লোক খুব একটা না বুঝলেও তাঁরা দুজন দুজনের জন্য যে একেবারে উপযুক্ত সে কথা বলছেন গোটা পরিবারের লোকজন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement