টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: লকডাউনে মার খাচ্ছে ব্যবসা। যারা সারা বছরের অন্ন জোগায়, তাদের মুখে সামান্য খাবার তুলে দিতেও ব্যর্থ। একের পর এক কারণে জমছে ক্ষোভ। এবার প্রতিবাদে ফেটে পড়ল বাঁকুড়ার দুগ্ধ ব্যবসায়ীদের একাংশ। পুকুরে ড্রাম ড্রাম দুধ ফেলে অভিনব প্রতিবাদে শামিল তাঁরা। বার্তা, এই দুধ এখন আর কোনও কাজে লাগছে না।
করোনা সংক্রমণ রুখতে কেন্দ্রের নির্দেশে দেশজুড়ে চলছে ২১ দিনের লকডাউন। বন্ধ হয়ে পড়েছে বাজারহাট, বন্ধ মিষ্টির দোকান। যার জেরে চরম সমস্যার মুখে পড়েছেন বাঁকুড়ার বাগাতাপাল গ্রামের শতাধিক দুধ ব্যবসায়ী। প্রতিদিন বাগাতাপাল গ্রাম থেকে প্রায় ১৫ থেকে ২০ কুইন্ট্যাল দুধ উৎপন্ন হয়। সেই দুধ থেকে ছানা তৈরি করে এই জেলা-সহ আশপাশের জেলাগুলোতে মিষ্টি তৈরির জন্য সেই ছানা নিয়ে পাড়ি দেয় দুধ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত গ্রামের বেশিরভাগ পরিবার। তাতেই যে রোজকার হয়, তা দিয়ে জীবনধারণ করেন। এটাই তাঁদের রোজনামচা।
কিন্তু বর্তমানে এই নির্ভরতাটুকুও আর থাকছে না। লকডাউনের সময়ে টানা ২১ দিন এই বাজার বন্ধের ফলে চরম সমস্যার মুখে গ্রামের দুগ্ধ ব্যবসায়ীরা। অন্য দিনের মতো আজও এই গ্রাম থেকে দুধ পনেরো থেকে কুড়ি কুইন্ট্যাল দুধ তৈরি হচ্ছে। কিন্তু উৎপাদিত দুধের বিনিময়ে আজ আর অর্থ মিলছে না। সবটাই নষ্ট, বৃথা। কারণ, এই সময়ে কোনও মিষ্টি কিনছেন না। যা থেকে এতদিন তাঁদের সংসার চলত, সেই গবাদি পশুর মুখে খাবারটুকু তুলে দেওয়ার সামর্থ্যও তাঁরা হারিয়ে ফেলছেন। তাই ড্রাম ড্রাম দুধ স্থানীয় পুকুরে ফেলে দিয়ে সেই ক্ষোভ উগরে দিলেন দুধ ব্যবসায়ীরা। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে তাঁদের একটাই আবেদন, কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার তাঁদের সাহায্যে এগিয়ে আসুক। লকডাউনের বাকি দিনগুলো কীভাবে কাটাবেন, তা নিয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে বাগাতাপাল গ্রামের পরিবারগুলির।
যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লকডাউনের দিনগুলি ছাড়াও একমাসের রেশন সম্পূর্ণ বিনামূল্য রাজ্যবাসীকে দেওয়ার ঘোষণা করেছেন। তাঁর নির্দেশমতো বিভিন্ন জেলায় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার তোড়জোড়ও শুরু হয়েছে। তা সত্ত্বেও খাবার জোগান নিয়ে এই দুধ ব্যবসায়ী আশ্বস্ত হতে পারছেন না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.