ছবি: প্রতীকী
ধীমান রায়, কাটোয়া: পেটে প্রবল যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে ভরতি মেয়ে। হাসপাতালে বেডে তাঁকে জ্ঞান হারাতে দেখে নাকে ধোঁয়া দিতে গিয়েছিলেন এক মহিলা। মেয়ের মুখ তো পুড়লই, অল্পের জন্য বড়সড় অগ্নিকাণ্ডের হাত থেকে রক্ষা পেলেন অন্য রোগীরা। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে। তবে ওই মহিলা ক্ষমা চেয়ে নেওয়ায় থানায় আর অভিযোগ দায়ের করেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
[বাড়ির উঠোনে মায়ের দেহ সমাধিস্থ মেয়ের! চাঞ্চল্য সিউড়িতে]
অজ্ঞান হয়ে গেলে জুতোর গন্ধ শোঁকানো কিংবা নাকে ধোঁয়া দেওয়া, গ্রামগঞ্জে রোগীকে এমনই সব আজব টোটকা দেওয়ার রেওয়াজ আছে। এমনকী, যাঁকে সাপে কামড়েছে, তাঁকেও ওঝার কাছে নিয়ে যান অনেকেই! শেষে যখন রোগী প্রায় মরণাপন্ন, তখন নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। কিন্তু, তা বলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীকে টোটকা! অবিশ্বাস্য মনে হলেও এমনই ঘটনা ঘটল কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে। বছর সতেরোর নবনীতা মজুমদারের বাড়ি কেতুগ্রামের উদ্ধারণপুর গ্রামে। স্থানীয় একটি স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী সে। গত কয়েক দিন ধরে পেটের যন্ত্রণা কষ্ট পাচ্ছিল নবনীতা। যন্ত্রণা এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে, মাঝেমধ্যেই জ্ঞান হারাচ্ছিল ওই কিশোরী। সোমবার দুপুরে নবনীতাকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভরতি করেন পরিবারের লোকেরা। তিনতলায় মহিলা ওয়ার্ডের ৫ নম্বর বেডে ভরতি করে চিকিৎসা চলছিল। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শ্বাসকষ্টের সমস্যার জন্য নবনীতাকে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছিল।
রোজকার মতোই বৃহস্পতিবার সকালেও মেয়েকে দেখতে কাটোয়া হাসপাতালে যান নবনীতার মা স্বপ্না মজুমদার। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বেডে পাশে যখন বসেছিলেন স্বপ্নাদেবী, তখন তিনি খেয়াল করেন যে, নবনীতা জ্ঞান হারাচ্ছে। কাউকে কিছু না বলে এক টুকরো কাপড়ে আগুন ধরিয়ে নাকে ধোঁয়া দেওয়ার চেষ্টা করেন ওই মহিলা। আর তাতেই ঘটে বিপত্তি। জ্বলন্ত কাপড়টি নবনীতার মুখে কাছে নিয়ে যেতেই অক্সিজেনের প্রভাবে দাউদাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে। ওই কিশোরীর গাল ও নাকের একাংশ পুড়ে যায়। তবে আগুনের আঁচে জ্ঞান ফেরে নবনীতার। তার চিৎকার ছুটে আসেন কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নার্স ও চিকিৎসকরা। কোনওমতে আগুন নেভানো হয়। কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার রতন শাসমল জানিয়েছেন, ‘হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কোনও রোগীর বাড়ির লোককে যে এমন কাণ্ড ঘটাতে পারেন, তা কল্পনাও করতে পারেননি তিনি। আগুন ছড়িয়ে পড়লে বড়সড় অঘটন ঘটতে পারত।’ এদিকে এই ঘটনার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন স্বপ্না মজুমদার। তাঁর বিরুদ্ধে আর পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
ছবি: জয়ন্ত দাস
[ কলেজে চিতাবাঘের হানা! ভয়ে কাঁটা পড়ুয়া-সহ স্থানীয় বাসিন্দারা]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.