শুভদীপ রায় নন্দী, শিলিগুড়ি: পাহাড়ে আগমন হতে চলেছে বিদেশি অতিথির। সুদুর জার্মানি থেকে উড়ে আসছে সেই অতিথিরা। দার্জিলিংয়ের পদ্মজা নায়ডু হিমালয়ান জুওলজিকাল পার্কে জার্মানি থেকে আনা হচ্ছে পাঁচটি মিশমি টাকিন। দেশের মধ্যে প্রথম কোনও চিড়িয়াখানায় দেখা মিলবে মিশমি টাকিনের। রাজ্যের উদ্যোগে এবার দার্জিলিংয়ে দেখা মিলবে এই টাকিনের। রাজ্য বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, জার্মানির বার্লিনের ‘টায়ার পার্ক’ থেকে ওই পাঁচটি মিশমি টাকিনকে আনা হচ্ছে দার্জিলিংয়ের চিড়িয়াখানায়। শুক্রবার রাতে বিমানে দমদম বিমানবন্দরে নিয়ে আসা হয় টাকিনগুলিকে। সেখান থেকে সড়কপথে শনিবার সকালে দার্জিলিং চিড়িয়াখানায় পৌঁছানোর কথা পাঁচ নতুন অতিথির। তাঁদের মধ্যে তিনজন পুরুষ ও দুজন মহিলা। তাঁরা হল চার্লস, ড্যানি, রক, ক্লেয়ার ও রামোনা। পরিবর্তে একটি রেড পান্ডা দম্পতিকে পাঠানো হবে দার্জিলিং টায়ার পার্কে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে রাজ্যের পর্যটনশিল্প আরও বেশি উৎকৃষ্ট হতে শুরু করেছে। বিশেষ করে ইকো ট্যুরিজমে জোর দিয়েছেন তিনি। বেঙ্গল সাফারি পার্কের পাশাপাশি দার্জিলিংয়ে বিদেশি পর্যটকদের আরও বেশি করে আকৃষ্ট করতে এই পদক্ষেপ রাজ্যের। বরাবরই উত্তরবঙ্গের মধ্যে শিলিগুড়ি ও দার্জিলিং বিশেষ প্রিয়স্থান তাঁর। আগামী ২১ জানুয়ারি ফের উত্তরবঙ্গ সফরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী। ২৩ জানুয়ারি যাওয়ার কথা রয়েছে দার্জিলিংয়ে। তাঁর আগে মুখ্যমন্ত্রীর তরফে পাহাড়বাসী ও পর্যটকদের জন্য এই উপহার। খবর চাউর হতেই পর্যটনমহলে খুশির হাওয়া।
রাজ্যের বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলেন, “পদ্মজা নায়ডু চিড়িয়াখানা ঐতিহাসিক। দার্জিলিংয়ের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র। আর নতুন প্রানীরা মূলত শীতপ্রধান দেশের। সেজন্য তাঁদের পাহাড়ি পরিবেশেই রাখা প্রয়োজন। পাহাড়ের পরিবেশের সঙ্গে খাপখাওয়াতে খুব একটা অসুবিধা হবে না।” স্টেট জু অথরিটির মেম্বার সেক্রেটারি বিনোদকুমার যাদব বলেন, “পাঁচটি মিশমি টাকিনকে দার্জিলিং চিড়িয়াখানায় আনা হচ্ছে। চুক্তি অনুযায়ী পাঁচটি মিশমি টাকিনের পরিবর্তে একটি পুরুষ ও একটি মহিলা রেড পান্ডা দেওয়া হবে টায়ার পার্ক কর্তৃপক্ষকে। তবে তাদের ফেব্রুয়ারি মাসে পাঠানো হবে।” দার্জিলিং চিড়িয়াখানার ডিরেক্টর রাজেন্দ্র জাকার বলেন, “ভারতের মধ্যে প্রথম কোনও চিড়িয়াখানায় দেখা মিলবে মিশমি টাকিনের। চিড়িয়াখানায় আনার পর বেশ কয়েকদিন তাদের নাইট শেল্টারে রেখে পরিচর্যা করা হবে। এরপর পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারলেই ছাড়া হবে এনক্লোজারে।”
রাজ্য বনদপ্তর ও স্টেট জু অথরিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁচটি টাকিনের মধ্যে সব থেকে ছোট চার্লস। তাঁর বয়স সাত মাস ১১ দিন। এছাড়া ক্লেয়ারের বয়স ২ বছর ২৮ দিন, ড্যানি ২ বছর ১০ দিন, রামোনা এক বছরের ও রক এক বছর তিন মাসের। টায়ার পার্কের ফ্রেডরিচেসফিল্ডে জিএমবিএইচ চিড়িয়াখানা থেকে এই পাঁচজনকে আনা হচ্ছে। সব মিলিয়ে রাজ্য বনদপ্তরের মোট ১৫ লক্ষ টাকা খরচ হচ্ছে। মিশমি টাকিনের জন্মগত স্থান চিন। যদিও মিশমি টাকিন ভুটানের জাতীয় প্রানী। মিশমি টাকিন ভুটানে ‘ডঙ্গ ঘেম সে’ নামে পরিচিত। পাহাড়ের এক হাজার ফুট উচ্চতা থেকে প্রায় পাঁচ হাজার ফুট উচ্চতায় বসবাস করে। বাঁশ ও পাহাড়ি ঘাস মূল খাদ্য। পাঁচটি মিশমি টাকিনের পরিবর্তে দার্জিলিংয়ের তোপকেদাড়া থেকে দুটি রেড পান্ডা ফেব্রুয়ারি মাসে বার্লিনের চিড়িয়াখানায় পাঠানো হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.