সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রচারের শুরু থেকেই তাঁর গলায় ছিল আত্মবিশ্বাসের সুর৷ জয় যে পুরোপুরি নিশ্চিত, তা বারবারই জানিয়েছিলেন মুনমুন সেন৷ ভোট জয়ের আনন্দে কী করবেন, তাও ভেবে ফেলেছিলেন তিনি৷ কিনেছিলেন বেশ কয়েকটি শাড়ি৷ বিরোধী প্রার্থীর সঙ্গে ভোটের ব্যবধান যত বাড়বে, সেই অনুপাতে শাড়ি বদলাবেন বলেই ভেবে রেখেছিলেন আসানসোলে তৃণমূলের তারকা প্রার্থী৷ কিন্তু ভোটের ট্রেন্ড দেখেই হতাশ তিনি৷ তাই নতুন শাড়ি পড়ে রইল আলমারিতেই৷ পরিবর্তে একটা শাড়িতেই দিন কাটল মুনমুন সেনের৷
২০১৪-র ম্যাজিক কাজে লাগল না ২০১৯-এ৷ সিপিএমের অভিজ্ঞ, হেভিওয়েট প্রার্থী বাসুদেব আচারিয়াকে হারানোর কাজটা মসৃণভাবে করতে পারলেও, বাবুলকে হারানো বেশ কঠিন হয়ে পড়ল৷ তাই আসানসোলের প্রার্থীতে চমক থাকলেও, ফলাফল ঠিক ততটাই ম্যাড়মেড়ে৷ মুনমুনকে পর্যুদস্ত করে নিজের ক্যারিশ্মাই ধরে রাখলেন আসানসোলের বিদায়ী সাংসদ৷ ২০১৪ সালের ভোটে আসানসোল আসনে জয়লাভ করে রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়। এবার সেই আসনেই মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের কন্যা তথা আর এক বিদায়ী সাংসদ মুনমুন সেনকে বাবুলের বিরুদ্ধে প্রার্থী করে তৃণমূল। প্রচারপর্ব থেকেই তাই সবার নজরে পশ্চিম বর্ধমানের এই হাই প্রোফাইল কেন্দ্র। প্রচারে বাবুল-মুনমুনের দ্বৈরথে বারবার শিরোনামে উঠে এসেছে আসানসোল।
বৃহস্পতিবার গণনায় অবশ্য গোড়া থেকেই লাগাম ছিল বাবুলের দলে। একের পর এক রাউন্ড যতই এগিয়েছে, বাবুলের ‘লিড’ ততই পাল্লা দিয়ে বেড়েছে। জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে বাবুলের প্রতিক্রিয়া, “আমরা ছাপ্পা ভোটের পরিকল্পনা করিনি। জনগণের ভোটে জয়ের জন্য আমরা মিছিল-মিটিং করেছি। আর সেই জনগণের ভোটেই জিতছি। কবিগুরুর ভাষায়, ‘চিত্ত যেথ ভয় শূন্য, উচ্চ যেথা শির…।’ বাবুলের জয়ের আভাস মিলতেই গণনাকেন্দ্রর সামনে বিজেপি সমর্থকরা উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন। শুরু হয় গেরুয়া আবিরে হোলি খেলা৷
বাবুলের প্রতিপক্ষ মুনমুন সেনও গণনাকেন্দ্রে হাজির হন। গণনার গতিপ্রকৃতি দেখে রীতিমতো টেনশনে ছিলেন তিনি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মুনমুন বলেন, “একটু টেনশনে তো বটেই। বুকটা যেন ধড়ফড় করছে।” জনগণের রায় মেনে নেবেন বলেও জানান মুনমুন সেন৷ তবে গণনাকেন্দ্রের সামনে জড়ো হওয়া তৃণমূল কর্মীদের মুখে হতাশার ছাপ স্পষ্ট৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.