অভিরূপ দাস: কোভিড (COVID-19) নেগেটিভ হয়েও রক্ষে নেই। কোভিড পরবর্তী জটিলতাও হানছে মারণ আঘাত। তেমনই আঘাতে এবার চলে গেলেন শহরের খ্যাতনামা হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. দেবাশিস মিত্র। নারায়ণা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের প্রখ্যাত এই হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের প্রয়াণে শোকাহত চিকিৎসককুল। বছর পঁয়ষট্টির চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন মাস দেড়েক আগে। কোভিড নেগেটিভও হয়েছিলেন। কিন্তু তার পরেই শুরু হয় সমস্যা। ফুসফুসে জটিলতা দেখা দেয়।
নারায়ণা হাসপাতালের কার্ডিয়াক অ্যানাস্থেশিয়ালজিস্ট ডা. শৈবাল রায়চৌধুরী জানিয়েছেন, পোস্ট কোভিড পালমোনারি ফাইব্রোসিসে আক্রান্ত হয়েছিলেন উনি। শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। বুকের হাড়ের পেছনে ব্যথা বা চাপ অনুভব করছিলেন। ক্রমশ কমছিল অক্সিজেন সেচুরেশন। দ্রুত হাসপাতালের ভেন্টিলেশনে ভরতি করা হয় ওঁকে। চিকিৎসকরা আপ্রাণ চেষ্টা করেন। টানা দেড়মাস ভেন্টিলেশনে কাটিয়ে মঙ্গলবার মারা গেলেন ডা. দেবাশিস মিত্র।
করোনা আবহেও যিনি একের পর এক স্বাস্থ্যশিবির করে গিয়েছেন। বস্তিতে ঘুরে ঘুরে করোনা সচেতনতার কাজ করেছেন। ওয়েস্টবেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের সদস্য ডা. রাজীব পাণ্ডে জানিয়েছেন, প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ দু’ভাবেই চিকিৎসকদের শেষ করে দিচ্ছে করোনা। এ পর্যন্ত রাজ্যে দেড়শোরও বেশি চিকিৎসককে ছিনিয়ে নিয়েছে কোভিড।
সম্প্রতি করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন প্রখ্যাত নিউরোলজিস্ট ডা. বিমান বোস। এরপরেও সাধারণ মানুষের হুঁশ না ফেরায় চিন্তিত চিকিৎসককুল। ডা, রাজীব পাণ্ডের কথায়, কোভিড থেকে সেড়ে উঠেও রক্ষে নেই। একটু জোরে হাঁটলেই হাঁপিয়ে যাচ্ছেন অনেকে। কোভিড থেকে সেড়ে উঠেই তাই উদয়স্ত পরিশ্রম করতে বারণ করছেন চিকিৎসকরা। রাতে কমপক্ষে ৮ ঘণ্টা ঘুম, এমনকী, দিনেও একটু বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। তা না হলে ‘পোস্ট কোভিড সিম্পটম’ মারাত্মক হতে পারে। ডা. রাজীব পাণ্ডের কথায়, চিকিৎসকদের বিশ্রাম নেওয়ার উপায় নেই। কোভিড থেকে সেড়ে উঠেই কাজে যোগ দিতে হচ্ছে। যার ফলে ঠেকানো যাচ্ছে না মৃত্যু মিছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.