সৌরভ মাজি, বর্ধমান: মোমো আতঙ্কের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়াচ্ছে মরফিন-ভাইরাসের গুজব। সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই মেসেজে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নাম করে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। তাতে কোনও একটি বিশেষ জায়গার নাম করে লেখা হচ্ছে সেখানে মরফিন ভাইরাস ছড়িয়েছে মাছ থেকে। বহু মানুষ নাকি হাসপাতালে ভরতি। এক সপ্তাহের মধ্যে নাকি এক লক্ষ মানুষের মৃত্যু হবে বলে ওই ভুয়ো মেসেজে লেখা হচ্ছে। এক কেজির উপরে মাছ খেতেও নিষেধ করা হচ্ছে।
[গড়িয়ার নিখোঁজ গবেষকের দেহ উদ্ধার বাগনানে, পকেটে মিলল চিরকূট]
জানা গিয়েছে, ওই ভুয়ো মেসেজের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে কয়েকজন চিকিৎসকের নামও উল্লেখ করা হচ্ছে। আর এই ভুয়া মেসেজে বিদ্যুৎ গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে হোয়াটসঅ্যাপের বিভিন্ন গ্রুপে। অনেকেই বিশ্বাস করে পরিচিতদেরও পাঠাচ্ছেন। অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। সম্প্রতি পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের শুনুর গ্রামে মরফিন ভাইরাস ছড়িয়েছে বলে মেসেজ ভাইরাল হয়। কয়েকদিনের মধ্যেই শুধুমাত্র জায়গার নামটা বদলে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর করা হয়েছে। বাকি বিষয়বস্তু এক রেখে আতঙ্ক ছড়ানো হয়েছে একইভাবে। যদিও স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্তারা জানাচ্ছেন মরফিন ভাইরাস বলে নাকি কিছুই নেই। তাই এর থেকে আতঙ্কিত হওয়ারও কিছু নেই। স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্তারা জানাচ্ছেন ওই ধরনের কোনও মেসেজ তাঁদের তরফে দেওয়া হয়নি। ওটা ভুয়ো মেসেজ। এমনকী যে সব জায়গায় আক্রান্ত হওয়ার কথা বলা হচ্ছে সেখানেও এই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটেনি। কেউ বা কারা এটা অসৎ উদ্দেশ্যে করছে তা স্পষ্ট।
[‘লোকসভায় দলকে ৪২টি আসনই পাইয়ে দিও!’ তারা মায়ের কাছে প্রার্থনা অনুব্রতর]
চিকিৎসক অরূপ ঘোষ জানান, মরফিন ভাইরাস বলে তাঁদের অন্তত জানা নেই কোনও ভাইরাস আছে বলে। গুজব ছাড়া কিছু নয়। বিষয়টি পুলিশের সাইবার সেলেরও নজরে এসেছে। তারাও খতিয়ে দেখছে বিষয়টি। তবে তারা নিশ্চিত স্রেফ আতঙ্ক ছড়াতেই এটা কেউ করছে। সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁতেও একইভাবে এই মরফিন ভাইরাসের ভুয়া মেসেজ ছড়িয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়। সিআইডির তরফে ঘটনার তদন্তে নেমে কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করেছে বলে সাইবার সেল সূত্রে জানা গিয়েছে। এর আগে হোয়াটসঅ্যাপে মোমো আতঙ্ক ছড়ানো হয়েছিল। ঘটনার তদন্তে নেমে সাইবার সেল জানতে পেরেছিল পরিচিতরাই বিশেষ অ্যাপের সাহায্যে তা পাঠিয়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছিল। পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ সেই ঘটনায় এক ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রকে গ্রেপ্তারও করে। এবার মরফিন ভাইরাসের আতঙ্ক। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) তথা সাইবার সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিয়ব্রত রায় জানান, সব খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সিআইডি-র তরফে এই নিয়ে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। পুলিশের তরফে সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.