অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: গত পনেরো বছর ধরে মায়ের কোনও খোঁজ নেই। তিনি আদৌ বেঁচে রয়েছেন নাকি মৃত, তা জানেন না কেউই। তবে সালিশি সভার পরামর্শমতো মায়ের মাটির মূর্তি তৈরি করে শেষকৃত্য করলেন ছেলেরা। শিলিগুড়ির ফাঁসিদেওয়ার রাঙাপানি স্টেশন এলাকার ব্যতিক্রম ঘটনা অবাক করছে প্রায় সকলকেই।
জয়লাল চৌধুরী ও সাবিত্রী চৌধুরীর তিন ছেলে। প্রায় সাতাশ বছর আগে বাবাকে হারান তাঁরা। স্বামীকে হারানোর পর থেকে সাবিত্রী একা হয়ে যান। ছেলেদের সঙ্গে আর কথা বলতে না তিনি। মানসিক অবসাদে ভুগতে থাকেন। বছর পনেরো আগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তিনি। আর ফিরে আসেননি সাবিত্রী। পরিবারের কারও সঙ্গে যোগাযোগও রাখেননি। ছেলে-সহ পরিবারের কেউই জানেন না ওই বৃদ্ধা বর্তমানে কোথায় রয়েছেন। তিনি আদৌ বেঁচে রয়েছেন নাকি মৃত, তাও জানেন না কেউই।
ছেলেরা বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন, মায়ের বোধহয় মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু মায়ের শেষকৃত্য না হলে আত্মা যে শান্তি পাবে না। সে কারণে গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনা করেন ওই বৃদ্ধার ছেলেরা। তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন মায়ের সৎকার করবেন। সে কারণেই তৈরি হয় মায়ের মাটির মূর্তি। এরপর কালারাম বিষ্ণুপুর শ্মশান ঘাটে সৎকারের আয়োজনও করা হয়।
কাঁধে করে মায়ের মাটির মূর্তি নিয়ে যাওয়া হয় শ্মশানে। পুরোহিতের উপস্থিতিতে সমস্ত নিয়মকানুন মেনে সৎকারও করা হয়। ওই মহিলা আদৌ বেঁচে আছেন কিনা, তা জানেন না কেউই। তবে সৎকার করার পর ছেলেদের একটাই বক্তব্য, এবার শান্তি পেল নিখোঁজ মায়ের আত্মা। তবে ওই মহিলার তিন ছেলের কাজ শুনে সকলেই যে অবাক হচ্ছেন, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.