বাবুল হক, মালদহ: সকাল থেকে বড্ড মনে পড়ছিল মেয়েটার কথা। ছবিই যে সম্বল। তাই মেয়ের ছবি বুকে আগলে বসেছিলেন বহরমপুরে মেসের সামনে খুন হওয়া সুতপার মা। দুপুর গড়াতেই বেজে উঠল ফোনটা। ফোনের ওপারে তখন রয়েছেন সুতপার বাবা। কাঁদো কাঁদো গলায় বললেন, “মেয়ের খুনি সুশান্তর ফাঁসির সাজা হয়েছে।” তারপর আর নিজেকে সামলাতে পারেননি সুতপার মা। অঝোর নয়নে কেঁদেই চলেছেন তিনি। খুনির মৃত্যুদণ্ড হলেও আর তো ফিরে আসবে না মেয়ে, আক্ষেপ সন্তানহারা মায়ের।
দেড় বছর আগে ঘটেছিল অঘটন। গত বছরের ২ মে’র সন্ধেয় প্রেমিকের ধারালো অস্ত্রের একাধিক কোপে জীবন শেষ হয় সুতপার। আর সেই তখন থেকেই মালদহের এয়ারভিউ কমপ্লেক্স এলাকার বাড়িও যেন প্রাণ হারিয়েছে। কান্নাই যেন সঙ্গী সুতপার বাবা-মা ও ছোট বোনের। প্রতি মুহূর্তেই সুতপার কথা বড্ড মনে পড়ে তাঁদের। তা সত্ত্বেও চোয়াল শক্ত করে লড়ে গিয়েছেন আইনি লড়াই। লক্ষ্য একটাই মেয়ের প্রেমিককে শাস্তি দেওয়া। হলও তাই।
মেয়ের মৃত্যুর দেড় বছর পর মিলল সুবিচার। কলেজছাত্রীর খুনি প্রেমিককে ফাঁসির সাজা দিয়েছে আদালত। পুলিশ ও বিচারব্যবস্থার ভূমিকার প্রশংসা করেছেন সুতপার মা। প্রথম থেকে খুনির মৃত্যুদণ্ডই চেয়েছিলেন তিনি। অমানবিক বলে মনে হলেও সন্তানহারা মায়ের দাবি, সুশান্তের গণপিটুনিতে মৃত্যু হলেই হয়তো আসল শাস্তি হত। কান্নাভেজা চোখে একটাই আক্ষেপ তাঁর, আর কোনওদিন মেয়ে ফিরে আসবে না। আর সেই আগের মতো বাড়িতে হইহুল্লোড় করবেন না সুতপা। ‘প্রাণবন্ত’ মেয়ের ছবি বুকে জড়িয়ে স্মৃতি হাতড়েই দিন কাটাতে হবে স্বজনহারাদের।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.