সুমন করাতি, হুগলি: কোন্নগরে শিশু খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর মোড়। গ্রেপ্তার মৃত বছর আটেকের শিশুর মা ও তাঁর বান্ধবী। মঙ্গলবার ক্ষিদিরপুর বান্ধবীকে তাঁর ওয়াটগঞ্জ থানার খিদিরপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, সমকামী সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়ানোর জন্যই কি খুন হতে হল নিষ্পাপ শিশুকে?
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় নিজের ঘরে নৃশংসভাবে খুন হন আট বছরের শিশু শ্রেয়াংশু শর্মা। এর পর ঘটনার তদন্ত শুরু করে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ। বাড়িতে যখন কেউ ছিল না সেই সময় নিজের ঘরে টিভি দেখছিল ছোট্ট শিশুটি। এর পর ঘর থেকে তার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। সেই ঘটনায় চারদিনের মধ্যেই কিনারা করে ফেলল পুলিশ।
ধৃতরা হল শান্তা শর্মা ও তাঁর বান্ধবী ইফফাত পারভিন। মঙ্গলবার শ্রীরামপুরের ডিসিপি অর্ণব বিশ্বাস উত্তরপাড়া থানায় সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছেন, শান্তা ও ইফফাতের গভীর বন্ধুত্ব ছিল। শান্তার বিয়ে হয় ২০১২ সালে। বিয়ের আগে থেকেই ছিল সেই বন্ধুত্ব। পারভিনের বিয়ে হয় ২০১৮ সালে। তবে মাস খানেকের মধ্যে স্বামীর ঘর ছেরে চলে আসেন তিনি। তার পর থেকে দুজন-দুজনের বাড়িতে যাতায়াত করতেন সেটা তাঁদের পরিবার জানত। গভীর রাত পর্যন্ত ফোনে গল্প করতেন দুজনে। এদিকে ঘটনার পরদিন পারভিন সমবেদনা জানাতে শান্তার বাড়ি এসেছিলেন।
ডিসিপি আরও জানান, ঘটনাস্থল থেকে যে সব তথ্যপ্রমাণ মিলেছে তার ভিত্তিতে, ফরেনসিক তদন্তের রিপোর্ট ও ফিঙ্গার প্রিন্ট রিপোর্ট এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সেখান থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় খুনের পিছনে শিশুর মা ও তাঁর বান্ধবী আছে। তার ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয় দুজনকে। আগামিকাল দুজনকেই শ্রীরামপুর আদালতে পেশ করা হবে। রিমান্ডে নিয়ে তদন্ত এগোবে।
শিশুর বাবা পঙ্কজ শর্মা বলেন, তাঁর স্ত্রী এই ঘটনায় যু্ক্ত বিশ্বাস হচ্ছে না। তবে তিনি আগেই জানিয়েছিলেন, পরিচিত কেউ খুন করেছে। শিশুর মেসোমশাই গৌতম অধিকারী বলেন, “দুজনের সম্পর্ক ছিল জানতাম না, অভিযুক্তদের কঠিন শাস্তি চাই।” এই ঘটনা জানাজানির পর এলাকার বাসিন্দারা বলছে, একজন মা যে তাঁর সন্তানকে খুন করতে বা করাতে পারে সেটা কল্পনার অতীত। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে তারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.