স্টাফ রিপোর্টার: ফুল বদলাতেই বদলে গেল সুর। তার সঙ্গে পালটাতে শুরু করল বারাকপুর (Barrackpore) শিল্পাঞ্চলের রাজনৈতিক সমীকরণ। দীর্ঘ তিন বছরের বিরোধিতায় নিমেষের মধ্যে ইতি পড়ে গেল। গঙ্গাপাড়ের কোন ছোটবড় ঘটনায় যাঁরা একে অপরের বিরুদ্ধে তোপ দাগতেন, তাঁরাই একে অপরের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এখন রাজনীতির ময়দানে। রবিবার বিকেলের পর থেকেই একের পর এক এই ছবি দেখা গিয়েছে বারাকপুর লোকসভা জুড়ে। মঙ্গলবারও তার অন্যথা হয়নি। এদিন কাঁকিনাড়ার ফলাহারী বাবার মন্দিরে পুজো দিলেন সাংসদ অর্জুন সিং (Arjun singh)। সঙ্গে ছিলেন ভাটপাড়া পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রশাসক তথা বর্তমান কাউন্সিলর গোপাল রাউত।
অর্জুনের ঘর ওয়াপসিতে গোপাল এক কুইন্টাল লাড্ডু দিয়ে পুজো দিলেন মন্দিরে। এদিন সন্ধ্যায় ভাটপাড়া পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের রেলওয়ে সাইডিংয়ে দলীয় অনুষ্ঠানে শতাধিক বিজেপি কর্মী-সমর্থক তৃণমূলে যোগ দেন। তাঁদের হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে দিয়ে অর্জুন বলেন, “যাঁরা আমার সঙ্গে কাজ করেছে, তাঁদের বেশিরভাগই তৃণমূলে (TMC) যোগদান করবেন। ৩০ তারিখ দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় আরও বড় যোগদান হবে।”
পাটশিল্প নিয়ে কেন্দ্রীয় নীতির বিরোধিতা করার পর থেকেই বারাকপুরের সাংসদের দলবদল নিয়ে চর্চা শুরু হয়। ঠিক সেই সময়ই ভাটপাড়ায় ফক্করবাবার প্রাচীন শিবমন্দির নতুনভাবে তৈরি হয়ে উদ্বোধনের আগে গত ১১ মে সকালে কলসযাত্রার আয়োজন করা হয়। সেখানেই জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যামের সঙ্গে অর্জুন সিংকে একসঙ্গে হাঁটতে দেখা যায়। যদিও তখন দু’জনের কেউই এর মধ্যে রাজনীতি দেখেননি বলেই জানান।
এরপর পাটশিল্পের পাশাপাশি বিজেপির নেতৃত্ব এবং সংগঠনের কঙ্কালসার অবস্থা নিয়ে মুখ খোলেন বারাকপুরের সাংসদ। জল্পনা আরও বাড়ে। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে দেখা করেও তাঁর সুর পালটায়নি। তখনই মোটামুটি বোঝা যাচ্ছিল, অর্জুনের পুরনো দলে ফেরা শুধু সময়ের অপেক্ষা। এর অবসান ঘটে রবিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে ঘাসফুলের পতাকা নিয়ে। তারপর থেকে শিল্পাঞ্চলের দীর্ঘ তিন বছরের বিরোধীরা একে অপরের প্রসঙ্গে বলতে শুরু করেন ব্যক্তিগত কোনও বিরোধ ছিল না, বিরোধিতা ছিল রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে।
পরের দিন মঙ্গলবার সকালে একসময়ের প্রতিদ্বন্দ্বী ভাটপাড়া পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রশাসক তৃণমূল নেতা গোপাল রাউতকে সঙ্গে নিয়ে কাঁকিনাড়ার ফলাহারী বাবার মন্দিরে পুজো দেন অর্জুন সিং। পুজো শেষে অর্জুন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “দু’দিন মন্দিরে পুজো দিতে আসার সময় পাইনি। গোপাল জানাল এদিন পুজোর আয়োজন করেছে। তাই পুজো দিয়ে চলে এলাম। এখানে যারা আছে সবাইকে আমি তৈরি করেছি, তারা সবাই আমার সঙ্গে আছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.