Advertisement
Advertisement
Visva Bharati

বিশ্বভারতীর গবেষকের রহস্যমৃত্যু, পথ দুর্ঘটনার বলি নাকি অন্য কিছু?

কর্মক্ষেত্রে বেশ কয়েকদিন ধরেই নানা জটিলতা ছিল তাঁর।

Mysterious death of Visva Bharati's scholar
Published by: Sayani Sen
  • Posted:April 10, 2025 9:38 pm
  • Updated:April 10, 2025 9:38 pm  

দেব গোস্বামী, বোলপুর: বিশ্বভারতীর গবেষক ছাত্রের পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু ঘিরে দানা বেঁধেছে রহস্য। মৃত একাধারে গবেষক ছাত্র। অপরদিকে পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অধীনে এক প্রকল্পে প্রজেক্ট ইনচার্জ হিসাবেই কর্মরত ছিলেন। এবং তাঁর অধীনে বহু ছেলেমেয়ে কাজ করত বলেই জানা যায়। কর্মক্ষেত্রে বেশ কয়েকদিন ধরেই নানা সমস্যা জটিলতা প্রকাশ্যে এসেছে। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সমস্যা ও জটিলতার মাঝেই হঠাৎই আকস্মিক পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু ঘিরে জল্পনা ছড়িয়েছে। রুরাল ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মৃত ছাত্রের নাম অদ্রিশ দে (২৯)। বাড়ি বোলপুর সংলগ্ন সুপুরগ্রামে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে রুরাল ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে এটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় কর্মরত ছিলেন পরিবারের একমাত্র সন্তান। এমনকি কয়েক মাসের মধ্যে বিবাহও স্থির হয়। এক বছর আগে থেকেই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রকল্পে প্রজেক্ট ইনচার্জ হিসেবে যোগদান করেন। রঘুনাথপুরের একটি কোয়াটারে স্বেচ্ছাসেবী কর্মীদের সঙ্গেই থাকতেন। বোলপুরের সুপুরের বাড়িতে আসতেন সপ্তাহে একদিন দুদিন। জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যায় রঘুনাথপুরে হাঁটতে বের হন সহকর্মীদের সঙ্গে। আর সেই সময়ই একটি চারচাকা গাড়ি পিছন থেকে ধাক্কা মারে। পরিবারের কাছে খবর পৌঁছায় পথ দুর্ঘটনা হয়েছে অদ্রিশের। এরপরই তড়িঘড়ি পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন পুরুলিয়া রঘুনাথপুর হাসপাতালে পৌঁছন। সেখান থেকে স্থানান্তরিত করা হয় দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার সাত সকালেই মৃত্যু হয় গবেষণারত ছাত্রের।

Advertisement

মৃত ছাত্রের কাকা কালীচরণ দে বলেন,” দুর্ঘটনা শুনেই আমরা পৌঁছায় পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর হাসপাতালে। সেখানে গিয়েই দেখি আমাদের ছেলে পুরো মৃতপ্রায়। চিকিৎসকরা জানান এমন কোনও হাড় নেই যেটা ভাঙা পড়েনি। পিছনের মেরুদন্ড থেকে বাম ও ডানদিকে এমন কি কোমর পরিকল্পনা মাফিক গাড়ির ধাক্কায় ভেঙে ফেলা হয়েছে। দুর্গাপুরে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে এলেও প্রাণে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রকল্পের সহকর্মীরা ভাইপোকে মেরে ফেলেছে। পুলিশ তদন্ত করুক এবং দোষীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক সাজা দিক সংস্থার কর্মীদের।” বিশ্বভারতীর অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক বিশ্বজিৎ হালদার বলেন,” কম্পিউটার এন্ড সিস্টেম সাইন্স নিয়ে স্নাতকের পরে রুরাল ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পাঠ নেয়। এবং গবেষণারত গুনি পড়ুয়াদের মধ্যে একজন অদ্রিশ দে। সরাসরি অর্থনীতি বিভাগের না হলেও নানান সময় ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধা-অসুবিধা, শিক্ষা ভবনের হোস্টেল,পানীয় জল সংক্রান্ত সমস্যা নিয়েও সীমিত ক্ষমতার মধ্যেও সোচ্চার হত। পড়ুয়াদের যে কোনও সমস্যায় ঝাঁপিয়ে পড়ত। অন্যান্য গবেষক ছাত্র সহ সমীক্ষার কাজে তাঁর আকস্মিক মৃত্যুতে অপরিণীয় ক্ষতি।” তবে অদ্রিশ মৃত্যুর নানা তত্ত্ব ঘিরেই বেড়েছে রহস্য। তাঁকে পথ দুর্ঘটনায় ধাক্কা মেরে খুন করা হয়েছে বলেই দাবি করেছে পরিবার। যদিও এখনও পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে পারেনি শোকাহত পরিবার। তবে খুন নাকি পথ দুর্ঘটনা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। মৃত্যুর কারণ নিয়ে বেঁধেছে রহস্য। শোকাহত পরিবার পরিজন-সহ সহপাঠীরা। শোকের ছায়া নেমে এসেছে বোলপুরের সুপুর গ্রামে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement