বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: সংবাদ প্রতিদিনের খবরের জের। শীঘ্রই পেনশন পেতে চলেছেন নদিয়ার নবদ্বীপের এক প্রাথমিক স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক, যিনি জীবন শেষ করতে চেয়েছিলেন। কারণ, বহু আবেদন-নিবেদন সত্ত্বেও অবসরের সাত বছর পরও প্রাপ্য বকেয়া পাচ্ছিলেন না তিনি। ফলে বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে উঠেছিল তাঁর পক্ষে।
গত ৪ মাস ধরে নদিয়ার নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালের এক কোণে দিন কাটছিল ঘনশ্যাম সাহারায় নামে ওই বৃদ্ধের। অবশেষে তাঁকে ভরতি নিয়ে চিকিৎসা শুরু করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চরম হতাশা আর অবসাদে তিনি হারিয়ে ফেলেছিলেন বেঁচে থাকার মনের জোর। বলেছিলেন, “আমার আর এখন বেঁচে থাকার ইচ্ছা নেই। আমি স্বেচ্ছামৃত্যু চাই।” সেইসঙ্গে ঘনশ্যামবাবু জানিয়েছিলেন, “আমার প্রাপ্য পেনশন, বকেয়া পিএফ, গ্র্যাচুইটির জন্য নবদ্বীপ আরবান সার্কেলের সাব-ইন্সপেক্টরের কাছে আবেদন করেছিলাম। কিন্তু আজ পর্যন্ত মেলেনি কিছুই। বিষয়টি জেলা প্রাইমারি স্কুল কাউন্সিল, নবদ্বীপ আরবান সার্কেলের সাব ইন্সপেক্টর, জেলা স্কুল পরিদর্শক ও অন্যান্য অফিসেও জানিয়েছি। এত কিছু করেও এত বছরে আমার পেনশন, বকেয়া পিএফ, গ্র্যাচুয়িটি কিছুই মেলেনি। জীবনের প্রতি আমি চরম হতাশ। আর আমার বেঁচে থাকার ইচ্ছা নেই। এইভাবে বেঁচে থাকার থেকে মৃত্যু শ্রেয়। আমি স্বেচ্ছামৃত্যু চাই।”
অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক ঘনশ্যামবাবুর যন্ত্রণা ও বঞ্চনার খবর প্রকাশিত হয়েছিল সংবাদ প্রতিদিন-এ। এরপরই উদ্যোগী হন প্রাথমিক স্কুল কাউন্সিলের চেয়ারম্যান জ্যোতিপ্রকাশ ঘোষ। বুধবার সন্ধেয় তিনি জানিয়েছেন, এদিনই ওই হাসপাতালে গিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, পুলিশ, প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে ওই শিক্ষকের প্রাপ্য বকেয়ার সমস্ত কাগজপত্রে সই করানো হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই তিনি প্রাপ্য বকেয়া টাকা পেয়ে যাবেন। পেনশনের ফাইলও তৈরি হয়েছে। খুব শীঘ্রই পেনশন চালু হয়ে যাবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.