সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়: সুন্দরবনের গদখালি এলাকায় রাজ্য সরকারের একটি প্রকল্পের বেআইনি নির্মাণ এক মাসের মধ্যে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিল জাতীয় গ্রিন ট্রাইবুন্যাল বা জাতীয় পরিবেশ আদালত। পাশাপাশি এই বেআইনি নির্মাণের জন্য রাজ্যকে ১ কোটি টাকার জরিমানা দিতে হবে বলেও নির্দেশ দেন আদালতের বিচারক।
[ আরও পড়ুন: মৃত তিন হাতি আত্মার শান্তিকামনায় হবে শ্রাদ্ধ, ন্যাড়া হবেন গ্রামের মানুষ]
সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এবং উপকূলবর্তী ম্যানেজমেন্ট জোন অথরিটির রিপোর্ট জমার পর, বাড়তে পারে এই জরিমানার টাকার অংক৷ শুধু তাই নয়, বেআইনি নির্মাণের সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের বিরুদ্ধেও কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে বলে রাজ্যের মুখ্য সচিবের কাছে নির্দেশ পাঠিয়েছে আদালত। এমনকী, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সঠিক সময়ে, সঠিক কাজ না হওয়ায় ১০ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে গঙ্গাসাগরে নতুন করে হেলিপ্যাড তৈরির কাজও বেআইনিভাবে হচ্ছে বলে জানিয়ে দিয়েছেন জাতীয় পরিবেশ আদালতের বিচারক।
উল্লেখ্য, বছর পাঁচেক আগে সুন্দরবনের গদখালি এলাকায় নদীর ধারে একটি টুরিস্ট লজ তৈরি করেছিল পর্যটন দপ্তর। দোতলা বাড়ির এই লজে থাকত আটটি ঘর, বাথরুম, রান্নাঘর, রিসেপশন এবং বেসমেন্ট। নাম দেওয়া হয়েছিল গদখালি টুরিস্ট লজ। কিন্তু ২০১৪-তে ওই লজের বিরুদ্ধে জাতীয় পরিবেশ আদালত নিজেই ‘সুয়োমোটো’ মামলা দায়ের করে। আদালতের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, নিয়ম মেনে ওই লজ তৈরি করা হচ্ছিল না। নিয়ম হল, নদীর পাড় থেকে ৫০ মিটার ছেড়ে যে কোনও নির্মাণ তৈরি করা যেতে পারে। কিন্তু সেই নিয়ম না মেনে নদীর পাড়েই এই লজ তৈরি করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। তখনই মামলা দায়ের করে পরিবেশবিদ সুভাষ দত্তকে ‘আদালত বান্ধব’ করে অনুসন্ধান শুরু করে আদালত। এ বিষয়ে সুভাষবাবু একটি অনুসন্ধান রিপোর্ট জমা দেন জাতীয় পরিবেশ আদালতে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে ২০১৫ তে এই টুরিস্ট লজ প্রকল্প ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয় পরিবেশ আদালত।
[ আরও পড়ুন: প্রিয় শিক্ষককে ছাড়তে নারাজ পড়ুয়ারা, ক্লাস বয়কট করে স্কুলে অবস্থান বিক্ষোভ ]
তখনই পরিবেশ আদালতের কাছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, টুরিস্ট লজের বদলে গদখালিতে তৈরি করা হবে নোনা জল মিষ্টি করার একটি প্রকল্প। তাতে প্রথমে সায় দেয় আদালত। সেই প্রকল্প তৈরি করা শুরু করে রাজ্য সরকার। কিন্তু সেটিও আইন মেনে করা হচ্ছিল না বলে আদালতের কাছে রিপোর্ট দেন পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত। এবার সেই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে ওই সরকারি প্রকল্প ভেঙে ফেলা ও কোটি টাকা জরিমানার নির্দেশ দিল আদালত। পাশাপাশি এই মামলার অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রে সন্তোষ প্রকাশ করে সুভাষ দত্তকে এক লক্ষ টাকা পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন বিচারক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.