প্রতীকী ছবি।
সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: অক্ষর জ্ঞানহীন মামাকে ‘মৃত’ বানিয়ে তাঁর সম্পতি নিজের নামে করে নিলেন ভাগ্নে। সবকিছু জানতে পেরে সরকারি ভাবে ‘মৃত’ ওই ব্যাক্তি বিএলআরও (BLRO) অফিসে যেতেই চক্ষু ছানাবড়া আধিকারিকদের। সব কিছু খতিয়ে না দেখে সম্পতির নামপত্তন করে দেওয়ায় ভূমি দপ্তরের ভূমিকা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
নদিয়ার(Nadia) সীমান্তবর্তী এলাকা কৃষ্ণগঞ্জের (Krishnaganj) পোড়াগাছা এলাকার বাসিন্দা অঙ্গ ধাড়া। আগে থাকতেন চৌগাছা এলাকায়। পোড়াগাছায় তাঁর বাড়ির কাছেই থাকেন দাদা ও ভাইপো তাপস ধাড়া। কিছুদিন আগে ভাইপো তাপস ধাড়া লক্ষ্য করেন তাঁর বাবা রঞ্জিত ধাড়ার নামে সম্পত্তি ঠিকঠাক থাকলেও কাকার নামে কোনও জমি নেই। জমির সরকারি তথ্যে লেখা রয়েছে অঙ্গ ধাড়ার ভাগ্নে নিতাই ঝড়ের নাম। সন্দেহ হতেই তিনি কাকা অঙ্গ ধাড়ার কাছে জানতে চান তাঁর পৈত্রিক বাড়ি-সহ এগারো শতক জায়গা ভাগ্নে নিতাই ঝড়কে বিক্রি করেছে কিনা।
ঘটনা জানাজানি হতেই তাঁরা যান কৃষ্ণগঞ্জ বিএলআরও অফিসে। সব কিছু দেখেশুনে ভূত দেখার অবস্থা হয় আধিকারিকদের। অঙ্গ ধাড়ার নামে জমি ফিরিয়ে দেওয়ার নিয়মাবলী বাতলে দেন বিএলআরও আধিকারিক তুহিন বিশ্বাস। ভাইপো তাপস ধাড়ার দাবি, কেউ ব্যক্তিগতভাবে অবৈধ কাজ করার চেষ্টা করতেই পারে। কিন্তু সরকারি দপ্তর কী করে তা মেনে নিল। তাহলে কি দপ্তরের লোকজন এর সঙ্গে যুক্ত? এরসঙ্গেই জমি আত্মসাৎকারী ভাগ্নের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন তিনি। তাপস বলেন, “গ্রামের পড়াশোনা না জানা মানুষ নিজেদের জমি জমা সংক্রান্ত কাজ করতে হিমশিম খান। এই সুযোগে জীবিত ব্যক্তিকে মৃত বানিয়ে তাঁর জমি কেড়ে নেওয়ার পিছনে যারা সহযোগিতা করেছেন সেই সরকারি আধিকারিকদেরও শাস্তি পাওয়া উচিত।”
কীভাবে সরকারি দপ্তরে এই ভুল তথ্য খতিয়ে না দেখে অন্যের নামে জমি লিপিবদ্ধ হল তা নিয়ে ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে। বর্তমান বিএলআরও আধিকারিক তুহিনবাবু জানিয়েছেন, ঘটনার সময় তিনি এখানে ছিলেন না। বছরখানেক আগে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায় বিএলআরও অফিসগুলোকে ‘ঘুঘুর বাসা’ বলেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর আশঙ্কা প্রকাশ করার পরও কেন বিএলআরও অফিসগুলোর অবস্থা ঠিক হচ্ছে না তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.