প্রতীকী ছবি
ধীমান রায়, কাটোয়া: ষাটোর্ধ্ব ছেলের দুর্ঘটনায় মৃত্যু। দুঃসংবাদ সহ্য করতে না পেরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী ৭৮ বছরের বৃদ্ধা। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের ছোড়া গ্রামে। মৃত বৃদ্ধার নাম লক্ষীরানি ঘোষ। বুধবার পরিবারের অন্যান্যদের চোখে ফাঁকি দিয়ে ঘরে ঢুকে গলায় ফাঁস দেন তিনি। কিছুক্ষণ পর ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করা হয়। বননবগ্রাম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে জানান।
লক্ষীরানির তিন ছেলের মধ্যে বড় ছিলেন বিশ্বজিৎ ঘোষ। ষাটোর্ধ্ব বিশ্বজিৎ মিনিবাস চালক। মোরবাঁধ থেকে দুর্গাপুর স্টেশন রুটে ওই মিনিবাস চলে। বুধবার দুপুরে মোরবাঁধে ফিরে আসার পর রোজ বাইকে চড়ে দুপুরে বাড়িতে খেতে আসতেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুরে মোযবাঁধ থেকে বাইকে চড়ে বাড়ি ফেরার সময় গুসকরা ১১ মাইল সড়কপথে ছোড়া বাসস্ট্যান্ডের কাছে বিশ্বজিৎবাবু দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। অন্য একটি বাইক পিছন থেকে তাঁকে ধাক্কা দিলে ছিটকে পড়েন বিশ্বজিৎ ঘোষ। মাথায় ও পায়ে গুরুতর চোট পান। তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে বননবগ্রাম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
কিন্তু বিশ্বজিৎ ঘোষের মৃত্যুর খবর মঙ্গলবার পর্যন্ত তাঁর মাকে দেওয়া হয়নি। বারবার ছেলের খোঁজ করলে শুধুমাত্র বলা হয়েছিল,”দুর্ঘটনা ঘটেছে। এখন হাসপাতালে আছে। ভালো আছে।” ময়নাতদন্তের পর বুধবার বাড়িতে দেহ পৌঁছনোর আগে পরিবারের সদস্যরা মা লক্ষীরানি দেবীকে ছেলের মৃত্যুর খবর দেওয়া হয়। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়িতে তখন অনেকেই কান্নাকাটি শুরু করেছেন। আত্মীয়স্বজনরাও অনেকেই চলে এসেছেন। লক্ষীরানিদেবী তাঁদের মাঝে ছিলেন। ‘পান খেয়ে আসি’ বলে ঘরে চলে যান। কিন্তু অনেকক্ষণ আসছেন না দেখে সন্দেহ হয়। ঘরে গিয়ে দেখা যায় গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলছেন। সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। এই জোড়া মৃত্যুর ঘটনায় শোকস্তব্ধ গোটা এলাকা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.