নন্দন দত্ত, সিউড়ি: ‘এক নেতা এক পদ!’ পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এমন ঘোষণা করেছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল৷ তাঁর স্পষ্ট ঘোষণা ছিল, দলীয় নির্দেশ অনুযায়ী হয় তাঁকে প্রশাসনিক পদে থেকে মানুষের সেবা করতে হবে৷ নচেৎ তাঁকে সাংগঠনিক দায়িত্ব নিয়ে দল করতে হবে৷ কিন্তু, পঞ্চায়েত গঠনের পর দেখা যাচ্ছে এলাকার বেশ কিছু সভাপতি দুটি পদেই বহাল তবিয়তে আছে। কেউ কেউ আবার নিজে সাংগঠনিক পদে থেকে স্ত্রীকে প্রধান বা সভাপতির পদে দায়িত্ব দিয়ে রেখেছেন৷ আর এই নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে তৃণমূলের অন্দরে৷
সাঁইথিয়া ও ময়ূরেশ্বরের দুটি পঞ্চায়েতের প্রধান হয়েছেন এলাকার অঞ্চল সভাপতি৷ বনগ্রামে প্রধান পদে শপথ নিয়েছেন তুষার মণ্ডল৷ যিনি গত বছর বকলমে পঞ্চায়েত পরিচালনা করেছিলেন৷ যদিও তিনি জানান, প্রধানের পদে দায়িত্ব নিয়ে কবির মণ্ডলের হাতে অঞ্চল সভাপতির দায়িত্ব দিয়ে দিয়েছি। অন্যদিকে, উলকুন্ডা পঞ্চায়েতের সামসুর আলম মল্লিক একইসঙ্গে গত দশ বছর ধরে অঞ্চল সভাপতি ও প্রধানের দায়িত্ব সামলেছেন। এবার নিয়ে তিনবার প্রধানের দায়িত্ব নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘দল যদি চায়, তাহলে অঞ্চল সভাপতির পদ ছেড়ে দেব৷’’ একই ব্লকের সভাপতি নারায়ণ প্রসাদ চন্দ্র এবার সমিতি থেকে নির্বাচিত। দলীয় সূত্রে খবর, তাঁকে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হবে৷ সেক্ষেত্রে তিনি দুটি পদেরই সুবিধা ভোগ করবেন৷ সিউড়ি এক ব্লকের সভাপতি স্বর্ণময় সিংহকে এবার পঞ্চায়েত সমিতির-সহ সভাপতি করার পরিকল্পনা নিয়েছে দল৷ একই সঙ্গে ওই ব্লকের কার্যকরী সভাপতি করম হোসেন খানকে মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ করার পরিকল্পনা রয়েছে৷
[ইসলামপুর কাণ্ডে মৃত ছাত্রদের দেহ নদীর চরে পুঁতে আন্দোলনে গ্রামবাসীরা]
দু’জনের কেউই পদ না ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন দলীয় দপ্তরে। আবার মুরারইয়ে ব্লক সভাপতি বিনয় ঘোষ সমিতির সদস্য হয়েছেন। তবে তিনি স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, ‘‘আমি সাংগঠনিক পদে থাকতে চাই।’’ তবে, মুরারই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির নাম উঠেছে এলাকার বিধায়ক আবদুর রহমানের স্ত্রী শেহনাজ বেগম৷ অন্যদিকে নলহাটি দুই ব্লকের কার্যকরী সভাপতি সামসুল হুদার স্ত্রী সেলিমা বিবিকে সভাপতি হিসাবে নাম ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি দুটি পদেরই সুবিধা ভোগ করতে চাইছেন বলে অভিযোগ। খয়রাশোলের এক অঞ্চল সভাপতি তাঁর স্ত্রীকে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ করতে উঠেপড়ে লেগেছেন। অন্যদিকে মহম্মদবাজারে গৌতম মণ্ডলকে সমিতিতে জয়ী হওয়া সত্বেও তাঁকে ব্লকের চেয়ারম্যান করে রাখা হয়েছে৷ দলের দাবি, গৌতমবাবুকে যদি সংগঠনে রাখা হয়, বাকিদের ক্ষেত্রে ভিন্ন নীতি কেন? কারণ, দলের সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক পদে একই পরিবারের লোক হওয়ায় দলে ক্ষোভ শুরু হয়েছে নিচু তলায়৷ যদিও দলের সহ-সভাপতি অভিজিত রানা সিং বলেন, ‘‘অনুব্রত মণ্ডল দলের নিয়ম কানুন সবাইকে বলে দিয়েছেন। সেই নীতি মেনে এক পদে এক ব্যক্তি রাখা হবে। বাকিদের একটি পদ ছাড়তে হবে৷’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.