রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: রাস্তার ধারে পড়ে রয়েছে চিতাবাঘ। সেই দৃশ্য নজরে পড়তেই ক্যামেরাবন্দি করার লোভ সামলাতে পারেননি অনেকেই। তাই সঙ্গে থাকা মোবাইল নিয়ে চিতাবাঘের বেশ কিছুটা কাছেই চলে গিয়েছিলেন কেউ কেউ। কিন্তু ভাবতে পারেননি পরিণতি এমণ ভয়ংকর হতে পারে।
মোবাইল হাতে এগোতেই এক যুবকের দিকে তেড়ে যায় চিতাবাঘটি। কিন্তু অসুস্থ হওয়ার কারণে তেড়ে গেলেও সে অর্থে দৌড়তে পারেনি সে। ফলে কোনওক্রমে পালিয়ে প্রাণে বাঁচেন ওই ব্যক্তি। জানা গিয়েছে, সোমবার সকাল আটটা নাগাদ আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটার বীরপাড়ায় জাতীয় সড়কের কাছে শালধুয়া এলাকায় রাস্তা পার করছিল চিতাবাঘটি। সেই সময় একটি ট্রাক ধাক্কা দিলে জখম হয় চিতাবাঘটি। এরপরই আহত অবস্থায় রাস্তার পাশে পড়েছিল।
বনদপ্তর সূত্রে খবর, সোমবার সকালে আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটার বীরপাড়া শালধুয়া এলাকায় রাস্তার পাশে চিতাবাঘটিকে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। ছবি তুলতে গেলে আহত অবস্থাতেই এক ব্যক্তিকে তাড়া করে চিতাবাঘটি। গোটা ঘটনার খবর পেয়ে বনদপ্তরের কর্মীরা গিয়ে চিতাবাঘটিকে উদ্ধার করে। জানা গিয়েছে, আহত চিতাবাঘটি পূর্নবয়স্ক ও স্ত্রী। ইতিমধ্যেই জলদাপাড়ার দক্ষিণ খয়েরবাড়ি চিতাবাঘ পুনর্বাসন কেন্দ্রে জখম প্রাণীর চিকিৎসা শুরু হয়েছে। তবে এখনও ঘাতক লরির কোন হদিশ পায়নি বনদপ্তরের আধিকারিকরা।
দলগাঁও ফরেস্টের রেঞ্জার রাজীব দে বলেন, ” চিতাবাঘটি গুরুতর জখম হয়েছে। ফালাকাটা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আমরাও এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি।” সোমবারের ঘটনার পর ফের জাতীয় সড়কে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণের দাবি তুলেছেন বন্যপ্রাণপ্রেমীরা। তাঁদের অভিযোগ, বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর জেরেই এই পরিস্থিতি।
আলিপুরদুয়ার নেচার ক্লাবের সদস্য অমল দত্ত বলেন, “জাতীয় সড়কে যানবাহনের গতিতে হ্রাস না টানা হলে উত্তরবঙ্গে একের পর এক বন্যজন্তুর মৃত্যর খবর পাওয়া যাবে। এর আগে গাড়ির ধাক্কায় উত্তরবঙ্গে একাধিক বন্যপ্রাণীর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য কার্যত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি প্রশাসনের তরফে।” কড়া সুরে তাঁরা বলেন, অভিযোগ জানিয়ে যখন কোনও কাজ হয়নি, তখন প্রয়োজনে আমরা আদালতের দ্বারস্থ হব, কিন্তু এই পরিস্থিতির পরিবর্তন করতেই হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.