ছবিতে অসুস্থ বাসিন্দারা, ছবি : বাসুদেব ঘোষ।
নন্দন দত্ত, সিউড়ি: লক্ষ্মীপুজোর ভোগ প্রসাদ খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লেন একই গ্রামের ৬০ জন বাসিন্দা। এদের মধ্যে জনা তিরিশেকের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁদের হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, লক্ষ্মীপুজোর রাতে প্রসাদ খাওয়ার পর মন্দির থেকে খিচুরি ভোগ সংগ্রহ করেন বাসিন্দারা। সেই খিচুরি বাড়িতে নিয়ে দু’দিন ধরে খাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ভোগের খিচুরিতেই চলে খাওয়াদাওয়া। শুক্রবার রাত গ্রামের এক একটি পরিবার থেকে অসুস্থতার খবর আসতে শুরু করে। শনিবার বেলা পর্যন্ত অসুস্থের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ৬০। এদের মধ্যে ৩০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদের হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের মল্লারপুর থানা এলাকার কালিকাপুর গ্রামে।
জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাত থেকেই স্থানীয়দের অনেকেই বমি করতে শুরু করেন। কেউ কেউ ঘনঘন বাথরুমে দৌড়ান। এক এক করে সংখ্যাটি ষাটে পৌঁছালে গ্রামে কান্নার রোল ওঠে। অসুস্থদের স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভরতি করা হয়। সেখানে ৩০জন বাসিন্দার অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তড়িঘড়ি তাঁদের যথাক্রমে সিউড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। অসুস্থাদের হাসপাতালের সংক্রমণ বিভাগে চিকিৎসা চলছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোগের খিচুড়িতে বিষক্রিয়ার কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে। পুজো হয়েছে বুধবার। কোথাও কোথাও বৃহস্পতিবারও ভোগের আয়োজন করা হয়। কালিকাপুরের লক্ষ্মীপুজোও বেশ বড় করে হয়। সেখানে বৃহস্পতিবার খিচুরি ভোগের ব্যবস্থা করেছিলেন আয়োজকরা। খবর পেয়ে গ্রামের বেশিরভাগ বাসিন্দারাই ভোগ সংগ্রহ করেন। কেউ কেউ বাড়িতে নিয়ে এসে তা দু’দিন ধরে খাওয়ার পরিকল্পনাও করেন। আগের দিনের বাসি খিচুড়ি কোনওভাবে পচে যেতে পারে বা বিষক্রিয়া জনিত কারণে এই ঘটনা ঘটতে পারে। যাঁরা অসুস্থ হয়ে বাড়িতে পড়ে আছেন। সেই সঙ্গে যেসব বাসিন্দা হাসপাতালে ভরতি আছেন তাঁদের প্রত্যেকেই ওই ভোগ প্রসাদ অন্তত দু’বার করে খেয়েছেন। চিকিৎসা শুরু হয়েছে। খুব শিগগির বাসিন্দারা সুস্থ বাড়ি ফিরবেন।
একইভাবে লক্ষ্মীপুজোর প্রসাদ খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনা ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটায়। অসুস্থ একই গ্রামের শতাধিক বাসিন্দা | গাইঘাটা থানার জামদানি বোসপাড়া এলাকার ঘটনা। এদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বেশ কয়েকজনকে স্থানীয় চাঁদপাড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভরতি করা হয়। একজনকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় বারাসত জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। বাসিন্দাদের দাবি পুজোর প্রসাদে বিষক্রিয়া থেকেই এই ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় প্রশাসনের তরফে ওই গ্রামে চিকিৎসা শিবির খোলা হয়েছে । তবে গোটা ঘটনায় আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক। সেইসঙ্গে সুস্থ থাকার জন্য প্রাথমিক চিকিৎসার নিয়মবিধি মেনে চলার কথা বলেছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.