সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পঞ্চায়েত নির্বাচনকে (Panchayat Election 2023) কেন্দ্র করে বাংলা অশান্তির সাক্ষী থেকেছে ঠিকই। কিন্তু সে অশান্তি বা হিংসা কোনওটাই একপাক্ষিক হয়নি। বিরোধীরা আক্রান্ত হয়েছে, কিন্তু ততোধিক আক্রান্ত হয়েছে শাসক। মৃতদের বেশিরভাগটাই তৃণমূলের সদস্য। অর্থাৎ ‘মারে’র থেকে ‘পালটা মার’টাই বেশি হয়েছে। আর সেটাই অক্সিজেন জোগাচ্ছে বিরোধী শিবিরকে। বিশেষ করে বাম ও কংগ্রেসকে (Congress)। কারণ এই ‘পালটা মার’টা তাদের তরফেই বেশি হয়েছে।
বস্তুত, রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনে অশান্তির ইতিহাস পুরনো। সেই বাম আমল থেকে হয়ে আসছে। ছবিটা এবারেও একই। কিন্তু এবার প্রেক্ষাপট আলাদা। সম্ভবত এই প্রথম বিরোধীদের হাতে সমানে আক্রান্ত হতে হয়েছে শাসককে। তৃণমূল (TMC) নিজেই সেকথা মানছে, এবং ভিকটিম কার্ড খেলার চেষ্টা করছে। তাঁদের বক্তব্য,”সন্ত্রাসের কারবার করছে বিরোধীরা।” যদিও সেই অভিযোগ খারিজ করছে বিরোধী শিবির। তাঁদের বক্তব্য, “মানুষের প্রতিরোধই তৃণমূলকে পিছু হটতে বাধ্য করেছে।” আর এই ‘গণপ্রতিরোধ’ বেশিরভাগটা এসেছে বাম এবং কংগ্রেসের তরফে।
শনিবার রাজ্যের যে যে জেলাগুলি থেকে মূলত প্রতিরোধের ছবি ধরা পড়েছে, সেগুলির বেশিরভাগই সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। মুর্শিদাবাদ, মালদহ, কোচবিহারের একটা অংশ, নদিয়ার কিছুটা অংশ, উত্তর চব্বিশ পরগনা, বর্ধমানের একাংশ ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীতে তৃণমূলের সঙ্গে সমানে সমানে ‘লড়াই’ হয়েছে বলে মনে করছে বিরোধী শিবির। আর এই ‘লড়াই’য়ের বেশিরভাগেরই নেতৃত্বে ছিল বাম-কংগ্রেস। সবচেয়ে বেশি অশান্তির ঘটনা ঘটেছে মুর্শিদাবাদে। কারণ, সবচেয়ে বেশি ‘প্রতিরোধ’ হয়েছে সেখানে। সেই সঙ্গে প্রতিরোধ হয়েছে মালদহ, উত্তর দিনাজপুর, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূমের কিছু অংশে। সে তুলনায় বিজেপি অনেক নিঃস্পৃহ ছিল। দিনহাটা ছাড়া এই ‘প্রতিরোধ’ বিজেপির তরফে তেমন দেখা যায়নি। জোটের নেতারা ঘনিষ্ঠ মহলে বলাবলি করছেন, ভোটের ফল যাই হোক, মানুষের এই প্রতিরোধ, আগামীদিনের জন্য ইতিবাচক হতে চলেছে।
বস্তুত, শনিবার ভোটের পর সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) আর মহম্মদ সেলিম, অধীর চৌধুরীদের (Adhir Chowdhury) বয়ানেও পার্থক্য ধরা পড়েছে। শুভেন্দুরা রাষ্ট্রপতি শাসন, আদালতে যাওয়ার কথা বলছেন। আর সেলিমরা বলছেন প্রতিরোধের কথা। ভোটের পর যেমন মহম্মদ সেলিমকে বলতে শোনা গিয়েছে,”তৃণমূল বেলাগাম সন্ত্রাস চালিয়েছে ঠিকই। কিন্তু তারপরেও মানুষ ভোট দিয়েছে। ভোটের গণনা ঠিকমতো হলেই বোঝা যাবে তৃণমূল জমি হারিয়েছে।” আর অধীর চৌধুরী রবিবার বলে দিয়েছেন,”তৃণমূল আর পারছে না। তাই এবার পুলিশকে পথে নামতে হচ্ছে। তৃণমূল এখন পিছনে থাকছে। আর পুলিশ সামনে গিয়ে সন্ত্রাস করছে।” বস্তুত অধীর-সেলিমদের কথায় কিছুটা হলেও ‘আত্মবিশ্বাস’ ধরা পড়ছে। সেই আত্মবিশ্বাসকেই লোকসভায় ‘পাথেয়’ করতে চাইছে জোট শিবির।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.