সোমনাথ পাল, বনগাঁ: কোথাও শাসকদল তৃণমূল আবার কোথাও বিরোধী শক্তি সিপিএম কিংবা বিজেপি। রক্তক্ষয়ী পঞ্চায়েত ভোটে সন্ত্রাসের হাত থেকে রেহাই মিলল না কোনও পক্ষরই। শুরুটা হয়েছিল সোমবার ভোর রাতে বাগদা বিধান সভার আষাঢ়ু পঞ্চায়েতের আমডোবগ্রাম থেকে৷ গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ওই দিন রাতে শাসকদল আশ্রিত জনা পঞ্চাশেক দুষ্কৃতী আমডোবগ্রামের ২১২, ২১৩ নম্বর পঞ্চায়েতের বুথে গিয়ে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে গ্রামবাসীরা খবর পেয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে ওই ভাড়াটে তৃণমূলীদের ওপর৷ বুথের ভেতরেই দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়৷ গ্রামবাসীদের রোষের মুখে কার্যত অসহায় হয়ে পড়ে অস্ত্রধারী ভাড়াটে দুষ্কৃতীরা। চলে এলোপাথাড়ি কোপ আর ব্যাপক বোমাবাজি গুলিবর্ষণ।
গ্রামবাসীরা প্রায় ১২ জন তৃণমূলীকে বেধড়ক গণপিটুনি দেয়৷ খবর পেয়ে বাগদা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই ওই তৃণমূলীরা কোনওরকমে পালিয়ে রক্ষা পায়। এরপরই গুরুতর জখম ওই তৃণমূল কর্মীদের বনগাঁ মহাকুমা হাসপাতালে ভরতি করা হয়৷ এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক৷ ওই বুথের পোলিং অধিকাকারিক অর্ণব পাল বলেন, তাঁর মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে দুষ্কৃতীরা প্রাণে মারার ভয় দেখিয়ে প্রায় ৮২০টি ব্যালট লুট করে৷
এদিন পুরোপুরি ভোট বন্ধ থাকে ওই বুথগুলিতে। এরপর বেলা যত গড়িয়েছে ততই শাসক ও বিরোধীদের সংঘর্ষে রক্তাক্ত হয়েছে বনগাঁ মহাকুমার বিভিন্ন এলাকা। যেমন কনিয়ারা এলাকায় শাসকদল বুথ দখলের চেষ্টা করলে ওই এলাকার তৃণমূলের প্রধান সশান্ত দাসের মাথায় কোপ মারে বিরোধী দলের কর্মী সমর্থকেরা। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রধান ও তাঁর এক অনুগামীকে বনগাঁ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
অন্যদিকে গাইঘাটার চাঁদপাড়া, ঠাকুরনগর, বেড়িগোপালপুর এলাকায় সংঘর্ষ হয় শাসক ও বিরোধীদের মধ্যে। এছাড়াও বাগদার মহানন্দ পাড়ায় বোমার আঘাতে জখম হন অভিজিৎ ঘোষ নামে এক তৃণমূল কর্মী। ওই দিন ছাপ্পা ভোট দেওয়ার অভিযোগে শাসকদলের হাতে আক্রান্ত হন বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক সিপিএমের পঙ্কজ ঘোষ। এছাড়া ও বাগদার হেলেঞ্চাতে ছাপ্পা ভোট হওয়ার প্রতিবাদে গ্রামবাসীরা ব্যালট ছিড়ে বাক্স পুড়িয়ে দেন। বনগাঁর কাল মেঘাতে ওই একই অভিযোগে ব্যালট বাক্স আটকে বিক্ষোভ দেখানো হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.