রাজকুমার, আলিপুরদুয়ার: ফের রাজ্যে নাগরিকপঞ্জির আতঙ্কে মৃত্যু। এবার আলিপুরদুয়ারে। আলিপুরদুয়ার ১ নম্বর ব্লকের শালকুমার এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১২/৬ নম্বর বুথের নতুন পাড়া এলাকায় নাগরিকপঞ্জির আতঙ্কে মৃত্যু হয়েছে এক ব্যক্তির। নাম সুলতান মিঞা (৪৫)। সোমবার দুপুরে হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। পরে কোচবিহারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সন্ধ্যায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
এদিন রাতেই মৃতদেহ বাড়িতে আনা হয়েছে। সুলতানের বউদি হাসেনা খাতুন বলেন, “ভোটার কার্ড ও আধার কার্ডে নাম ভুল ছিল। সেই কারণে কিছুদিন ধরে প্রশাসনের দরজায় দরজায় ঘুরছিল ও। সব সময় মনমরা হয়ে থাকত। এদিন দুপুরে আচমকা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়। কোচবিহারের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সন্ধ্যায় মারা যায়।” নাগরিকপঞ্জির আতঙ্কেই তাঁর মৃত্যু বলে দাবি পরিবারের। শালকুমার এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বাবলু কার্জি বলেন, “বেশ কিছুদিন ধরে সুলতান নাগরিকপঞ্জির আতঙ্কে ভুগছিলেন। ওঁনার বাবার নাম একেক জায়গায় একেক রকম ছিল। নিজের নামেও ভুল ছিল। সেই কারণে ছুটোছুটি করছিল। আমার কাছেও এসেছিলেন। এমন মর্মান্তিক পরিণতি হবে ভাবতেই পারিনি। নাগরিকপঞ্জির আতঙ্কেই ওঁনার মৃত্যু হয়েছে।” এদিকে এই মৃত্যুর খবর শোনার পরই মৃত ব্যক্তির বাড়িতে ছুটে যান আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী। তিনি পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান।
এনিয়ে রাজ্যে এনআরসি আতঙ্কে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ১০ জনের। আতঙ্ক দিনের পর দিন বাড়ছে। নয়াদিল্লি ও কলকাতার চলা রাজনৈতিক চাপানউতোরের উপর কড়া নজর রাখছে ঢাকা। বাংলায় এনআরসি হলে ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’দের কথায় রাখা হবে? তাদের কি বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে ঢাকার নীতি নির্ধারকদের মাথায়। এদিকে, নাগরিকপঞ্জির জরিয়তে ‘অনুপ্রবেশকারী’ শনাক্ত করা গেলেও তাদের নিয়ে কী করা হবে, এই বিষয়ে নিরুত্তর নয়াদিল্লি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.