রাজা দাস,বালুরঘাট: মেলেনি প্রতিবন্ধী শংসাপত্র। অর্থাভাবে বন্ধ চিকিৎসা। অগত্যা মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেকে শিকলে বেঁধেই রাখতে হয়েছে নিরুপায় বাবা-মাকে।
দক্ষিণ দিনাজপুর (South Dinajpur) জেলার বালুরঘাটের বঙ্গী এলাকার পদ্মপুকুর পাড়ার ঘটনায় নজর নেই প্রশাসনের। চিকিৎসার মাধ্যমে ছেলেকে সুস্থ করে শিকল মুক্ত জীবন চাইছে দরিদ্র পরিবার। পদ্মপুকুর পাড়ায় সরু গলির মধ্যে বাড়ি নারায়ণ দাস নামে এই যুবকে। দু’পায়ে লোহার শিকলে ভীষণ কষ্ট তার। কিন্তু বাবা-মা নিরুপায়। যদিও জীবনের প্রথম দিকটা ঠিক এমন ছিল না নারায়ণের। আর পাঁচজন ছেলের মতোই বড় হয়ে উঠছিল সে। কিন্তু হঠাৎ করেই পালটে যায় তার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
মানসিক রোগ ধরা পড়ে তার। জমানো অর্থে প্রথমে স্থানীয়ভাবে ছেলের চিকিৎসা করাতেন পেশায় টোটো চালক বাবা বাবলু দাস। পরবর্তীতে অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে যায় তার চিকিৎসা। ফলে দিন দিন বাড়তে থাকে তার মানসিক রোগ। বাধ্য হয়েই ছেলের পায়ে লোহার শিকল আটকে দেন পরিবারের সদস্যরা। সেভাবেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় তাকে। বাবলু দাস বলছেন, পাড়া-প্রতিবেশীদের যাতে কোনও অসুবিধা কিংবা ক্ষতি না হয়, তার জন্যই ছেলের পায়ে শিকল পরিয়েছেন। আবার দূরে কোথাও চলে যাওয়ার দুশ্চিন্তা থেকেও তাকে শিকলে বেঁধে রাখা।
তাঁর কথায়, “সামান্য টোটোর উপর রোজগার। পরিবারের খরচ চালিয়েও ছেলের চিকিৎসা করিয়েছিলাম একসময়। কিন্তু এখন হাতে টাকা নেই। অনেকের কাছে গিয়েছি ছেলের একটি প্রতিবন্ধী কার্ডের করানোর জন্য। কিন্তু কারও কাছ থেকেই কোনও সাহায্য পাইনি।” এদিকে ওই এলাকা অর্থাৎ ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত কাউন্সিলর পরিমল কৃষ্ণ সরকার জানান, “আমার কাছে এমন আবেদন নিয়ে কেউ আসেনি। এলে এ ব্যাপারে যথাযথ সাহায্যের চেষ্টা করব। চিকিৎসার প্রয়োজনে আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.