রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: বাড়িতে পুজো, তাই ভোগ খাওয়ানোর আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল প্রতিবেশীদের। কিন্তু গ্রামসভার অনুমতি নেননি গৃহকর্তা। আর সদস্যদেরও নিমন্ত্রণ করা হয়নি। তার জেরেই ফের ফতোয়া জারি হল পূর্ব মেদিনীপুরের (East Midnapore) পটাশপুরে। এর আগে এই জেলারই মহিষাদলের এক গ্রামে মহিলাদের ফুটবল মাঠে প্রবেশ নিয়ে ফতোয়া জারি হয়েছিল। তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। এবার ফের নয়া নিদান ঘিরে শোরগোল পড়ে গেল পটাশপুরে।
পটাশপুরের (Patashpur) ২ নম্বর ব্লকের শ্রীরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের খড়িকা পাটনা গ্রাম। এই গ্রামের বাসিন্দা তপন বিশাইয়ের বাড়িতে পুজো উপলক্ষে বুধবার গ্রামের সবাইকে ভোগ খাওয়ানোর আয়োজন করা হয়। তবে এই পুজোয় গ্রাম কমিটির সদস্যদের ডাকা হয়নি। এর পাশাপাশি গ্রামসভার কোনও অনুমতিও নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন গ্রামসভার সদস্যরা। গ্রাম কমিটির পক্ষ থেকে ফতোয়া জারি করে বলা হয় যে, এই অনুষ্ঠানে কোনও গ্রামবাসীর যাওয়া নিষেধ। গ্রাম কমিটির এই আদেশ অমান্য করলে ৫ হাজার টাকা জরিমানা (Fine) দিতে হবে। এটা শোনার পরই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন গ্রামবাসী থেকে পরিবারের সদস্যরা। বিশাই পরিবারের বিরুদ্ধে গ্রামসভার এই নিদানের বিচার চেয়ে প্রতিবাদে নামেন তাঁরা।
যদিও গ্রামসভার ওই ফতোয়ার (Fatwa) জেরে অনুষ্ঠানে গ্রামের কেউই উপস্থিত হতে পারেননি। হাঁড়ি হাঁড়ি খাবার নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়। তাতে বিশাই পরিবারের লোকজন খাবার নিয়ে গ্রামের মন্দিরের সামনে ধর্না দেন। দাবি করেন, এত আয়োজন করে রান্না করা ভোগ-প্রসাদ সকলকে খাওয়ানোর অনুমতি দিতে হবে। এ নিয়ে উত্তেজনা শুরু হয় গ্রামে। খবর পাঠানো হয় পটাশপুর থানায়। পুলিশ ও বিডিও ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এহেন ফতোয়া জারি করায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ৮ জন।
পটাশপুর থানার ওসি দীপক চক্রবর্তী বলেন, “গ্রাম কমিটির সম্পাদক গোপাল বেরা-সহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে এক হাজার মানুষের জন্য তৈরি খাবার নষ্ট হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।” আজ অভিযুক্তদের কাঁথি আদালতে পেশ করা হবে। এলাকায় অশান্তি এড়াতে পুলিশি টহল চলছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.