সৌরভ মাজি, বর্ধমান: ট্রেন দুর্ঘটনায় দুটি মারাত্মক জখম। অস্ত্রোপচার করা ছাড়া উপায় নেই। কিন্তু, রোগীকে যে কিছুতেই রাজি করানো যাচ্ছে না! মহা ফাঁপড়ে পড়েছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। তাদের বক্তব্য, দু’বার অপারেশন থিয়েটার নিয়ে গিয়েও ওই রোগীকে ফিরিয়ে আনতে হয়েছে। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে কার্যত বিনা চিকিৎসায় পড়ে থাকায় পায়ে পচন ধরেছে। ফলে আরও বড় বিপদের আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা। দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন হাসপাতালে অন্য রোগীরাও।
বর্ধমানের গলসি স্টেশন লাগোয়া একটি ঝুপড়িতে থাকেন জুগনু পাসি। বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে মধু বিক্রি করতেন বছর ছাব্বিশের ওই যুবক।দিন কুড়ি আগে ট্রেনে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন জুগনু। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বর্ধমান যাওয়ার পথে ট্রেন থেকে তাঁর চটি জোড়া পড়ে গিয়েছিল তালিত স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে। চটি তুলতে গেলে জুগনুর দুটি পায়ের কিছুটা অংশ ট্রেনে কাটা পড়ে। তড়িঘড়ি ওই যুবককে নিয়ে যাওয়া হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। বেড না মেলায় জরুরি বিভাগের অস্থি বিভাগের তিনতলার বারান্দায় ঠাঁই হয় তাঁর। এখনও সেখানে রয়েছেন তিনি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, পায়ে অস্ত্রোপচার করতে হবে। কিন্তু কোনও অবস্থাতেই অস্ত্রোপচার করাতে রাজি নন জুগনু পাসি। তাঁর বক্তব্য, ‘ট্রেন দুর্ঘটনায় খুবই ভয় পেয়েছি। আর অস্ত্রোপচার করাব না। ডাক্তারবাবুদের বলেছি, অন্যকোনও ভাবে আমার পা ঠিক করতে দিতে।’
কিন্তু অস্ত্রোপচার ছাড়া আর কোনওভাবে কি জুগনুকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব? বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ডেপুটি সুপার জানিয়েছেন, জুগনুর পায়ে এখন যা অবস্থা, তাতে অস্ত্রোপচার করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। বিষয়টি চিঠি দিয়ে পরিবারের লোককে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের কোনও আপত্তি নেই, কিন্তু রোগীকে কিছুতেই রাজি করানো যাচ্ছে না। পরিবারের লোকেদের বুঝিয়ে-সুঝিয়ে রাজি করাতে বলা হয়েছে। এদিকে জুগনুর পায়ে পচন ধরেছে, দুর্গন্ধে টিকতে পারছেন না হাসপাতালে অন্য রোগীরা।
ছবি: মুকুলেশুর রহমান
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.