সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: হাতে প্লাস্টার করা রোগী হাসপাতালের ছাদ থেকে পাইপ বেয়ে নামছেন! সোমবার দুপুরে এমনই দৃশ্য দেখে হকচকিয়ে গিয়েছিলেন পথচলতি মানুষজন। নিমেষের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে হাসপাাতালেও। সকলেই বেজায় চিন্তায় পড়ে যান। কীভাবে এই পরিস্থিতিতে তাঁকে অক্ষত রেখে উদ্ধার করা যায়, তা ভেবে দিশেহারা হয়ে পড়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শেষ পর্যন্ত অবশ্য দমকলের সহায়তায় ওই রোগীকে নিরাপদে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। গোটা ঘটনা ঘিরে রীতিমত টানটান উত্তেজনা ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে।
ঘটনার সূত্রপাত দিন কয়েক আগে। ঝাড়গ্রামের জামবনির বাসিন্দা সুদর্শন দণ্ডপাট গাছ থেকে পড়ে যান, হাত ভেঙে যায় তাঁর। ভাঙা হাতে প্লাস্টার করে দেওয়া হয়। এরপর সোমবার বেলার দিকে প্লাস্টার নিয়ে তিনি আসেন ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। অপারেশন থিয়টারে নিয়ে যাওয়া হয় সুদর্শনবাবুকে। সম্ভবত সেখানে গিয়ে তিনি ভয় পেয়ে যান। অস্ত্রোপচার হবে ভেবে পালাতে চান। এমনকী OT থেকে পালিয়ে সোজা উঠে যান পাঁচতলার ছাদে। সেখান থেকে পাইপ বেয়ে নিচের দিকে নামতে শুরু করেন প্লাস্টার করা হাত নিয়েই। রাস্তা থেকে এই দৃশ্য দেখতে পান স্থানীয়রা। তাঁরা বিপদের আশঙ্কা করতে থাকেন। হাসপাতালের বাইরে জড়ো হয়ে যান অনেকে।
অন্যদিকে, সুদর্শনবাবুকে উদ্ধার করতে ছাদে উঠে যান নিরাপত্তারক্ষীদের কয়েকজন। খবর পাঠানো হয় দমকলে। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ছুটে যায় দমকল বাহিনী। রোগীকে পাইপের কাছেই আটকে দেওয়া হয়। দমকল কর্মীরা প্রথমে বুঝতে পারছিলেন না তাঁকে কীভাবে উদ্ধার করা সহজ হবে। পরে তাঁরা ছাদে গিয়ে একটি দড়ি ছুঁড়ে দেন তাঁর দিকে, কোমরে দড়ি বেঁধে নেওয়ার কথা বলেন। এতজন উদ্ধারে এসেছে দেখে সুদর্শনবাবুও বুঝতে পারেন, পালানো অসম্ভব। ফলে বাধ্য হয়ে দমকল কর্মীদের নির্দেশ মেনে দড়ির সাহায্যে উঠে আসেন। হাঁপ ছেড়ে বাঁচেন সকলে।
ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের এই ঘটনা নিয়ে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা বলেছেন, ”ওই রোগী OT থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন। আমাদের ধারণা, ভয় পেয়েই তিনি এই কাণ্ড করেছেন। তবে দমকলের তৎপরতায় তাঁকে উদ্ধার করা গিয়েছে। তাঁর কোনও চোট, আঘাত লাগেনি। সুস্থই রয়েছেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.