জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: সাম্প্রতিক বিশ্বত্রাসের নাম – নোভেল করোনা ভাইরাস (Coronavirus)। তার বিরুদ্ধে লড়তে একদিকে বিশ্বের বিভিন্ন গবেষণাগারে তৈরি হচ্ছে অস্ত্র – ওষুধ, প্রতিষেধক, সংক্রমণ রুখতে আরোপ করা হচ্ছে একগুচ্ছ বিধিনিষেধ। সবই চলছে বিজ্ঞানসম্মতভাবে। তবে করোনামুক্তির জন্য ধর্মীয় রীতিনীতিও কম পালিত হচ্ছে না। এ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে করোনা ভাইরাস রুখতে যজ্ঞ-পুজোও চলছে। অনেকেরই বিশ্বাস, ‘করোনা দেবী’কে সন্তুষ্ট রাখলে, দ্রুতই সংক্রমণ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। সেই বিশ্বাসে শনিবার, বিপত্তারিণী পুজোর দিনে করোনা পুজোর আয়োজন করলেন বনগাঁর বাসিন্দাদের একাংশ। মহা ধুমধামে চলল পুজো।
বনগাঁর পশ্চিমপাড়া পুকুরপাড়ে শনিবার বিপত্তারিণী পুজো। একইসঙ্গে চলল করোনা পুজোও। এমনকী দুটি পুজো যে একসঙ্গে হবে, তা জানিয়ে বড়সড় পোস্টারও দেওয়া হয়েছিল। তা দেখেই পুজোয় শামিল হন এলাকার অনেকেই। করোনা ভাইরাসের আদলে তৈরি হয় নীলচে-হলুদ ‘করোনা দেবী’র মূর্তি। সেই মূর্তিতে মালা পড়িয়ে, সামনে উপাচার সাজিয়ে, মন্ত্র পড়ে পুজো করলেন পুরোহিত। পুজো দিলেন আশেপাশের অনেক বাসিন্দা। কেউ কেউ পুজো শুরু থেকে শেষ, গোটা সময়টাই উপস্থিত ছিলেন। জোড়হাতে সকলে প্রার্থনা করলেন, করোনামুক্ত হোক পৃথিবী।
যদিও এদিনের করোনা পুজো নিয়ে ঘোরতর আপত্তি তুলেছে বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী মঞ্চ। সংগঠনের সম্পাদকের বক্তব্য, এভাবে করোনা পুজো পুরোটাই অবৈজ্ঞানিক। শুধুমাত্র বিশ্বাস আর আবেগ থেকে এটা হচ্ছে। করোনা সংক্রমণ থেকে মুক্তি পেতে সচেতন হতে হবে সকলকে। আর সেই সচেতনতা প্রচারে বিজ্ঞানমঞ্চও কাজ করে বলে দাবি তাঁর।
বনগাঁর পশ্চিমপাড়াতেই প্রথম নয়। এর আগে আসানসোল, শিলিগুড়ি, রায়গঞ্জ-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তেই এধরনের পুজো হয়েছে। তবে কোথাও এধরনের কল্পিত মূর্তি ছিল না। ঘটে উপাচার সাজিয়ে পুজো করা হয়েছিল। যাতে ‘করোনা’ শক্তিকে তুষ্ট করে তার রোষ থেকে পৃথিবীকে নিরাপদ রাখা যায়, সেই আশায়। সেদিক থেকে বনগাঁর পশ্চিমপাড়ার পুজোর ধরন অন্যরকম। কে বলতে পারে, ভবিষ্যতে এমনই রূপে হয়ত পূজিত হবেন ‘করোনা দেবী’।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.