দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: গ্রাম পঞ্চায়েতে সাধারণত যেসব কারণে সর্বদলীয় বৈঠক বা সালিশি সভা হয়, হুগলির নবগ্রাম পঞ্চায়েতের সভা ছিল অন্যরকম। ভিন্ন কর্মসূচি কিন্তু অনেক গভীর তাৎপর্য। কাটমানি বা আমফান (Amphan) ত্রাণে যেমন দেখা গিয়েছে, তার ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে ভূমিকা এই পঞ্চায়েতের। করোনা রুখতে অন্যরকম কাজে পাশে পেল সব দল, ক্লাব ও বিশিষ্ট মানুষদেরও।
করোনা (Coronavirus) সংক্রমণের হাত থেকে কীভাবে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে, তা নিয়ে সব বিরোধী দলের প্রতিনিধি, চিকিৎসক ও এলাকার ২২টি ক্লাব সংগঠনকে নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক করে হুগলির নবগ্রাম পঞ্চায়েত। এই বৈঠক থেকেই যাঁরা করোনামুক্ত হয়েছেন তাঁদের প্লাজমা দানের আবেদন জানানোর প্রস্তাব রাখল পঞ্চায়েত। জোর দেওয়া হল সচেতনতায়। বর্তমানে পঞ্চায়েতে বসবাসকারী প্রায় ৩০ হাজার মানুষের মধ্যে ২৮ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকে করোনাযুদ্ধে সুস্থ হয়ে বাড়িও ফিরেছেন। যাঁরা এখনও চিকিৎসাধীন বা নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁদের পাশে থাকার আহ্বান জানানো হয়। পাশাপাশি পঞ্চায়েতের একটি পুরনো অ্যাম্বুল্যান্স মেরামতির পর রোগীর পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে তা ব্যবহার করা হবে।
পঞ্চায়েত উপপ্রধান গৌর মজুমদার বলেন, “আমরা যেরকমভাবে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করি সেরকমভাবে শিবির আয়োজন করে প্লাজমাদান করা যায় না। সেক্ষেত্রে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন যে সকল ব্যক্তি তাঁদের হাসপাতালে গিয়ে প্লাজমা দান করতে হবে। সেই প্লাজমাই করোনা আক্রান্তের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে।” বৈঠকের পর পঞ্চায়েতের সিদ্ধান্ত, যিনি প্লাজমা দান করবেন তাঁকে পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া ও নিয়ে আসার সমস্ত ব্যবস্থা করা হবে। কিছুদিনের জন্য সেই ব্যক্তির পুষ্টিকর খাদ্যেরও ব্যবস্থা করবে পঞ্চায়েত। প্রধান জানান, সুস্থ হয়ে যাওয়া সমস্ত ব্যক্তি ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকার পর তাঁদের কাছে প্লাজমা দানের আবেদন জানানো হবে। তারপর চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে যাঁরা প্লাজমা দান করতে ইচ্ছুক তাঁদের প্লাজমা করোনা আক্রান্তের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হবে। এই বৈঠকে সিপিএম, বিজেপি, কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা ছাড়াও ক্লাবসংগঠনগুলির পক্ষ থেকে পঞ্চায়েতের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানানো হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.